নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর। মিষ্টি হাসি ও সাবলীল অভিনয় দিয়ে জয় করেছেন দর্শকদের মন। বাণিজ্যিক সিনেমা থেকে শিল্পসমৃদ্ধ সিনেমা উভয় ধারার সিনেমাতেই তিনি রেখেছেন কৃতির স্বাক্ষর। নব্বই দশক থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত তিনি বাংলা সিনেমার দর্শকদের মনে এক বিশাল জায়গা দখল করে আছেন। সুপারস্টার থেকে সাধারণ মানুষ বেশিরভাগের কাছে জানতে চাইলে শোনা যাবে তাদের প্রিয় নায়িকা শাবনূর। অভিনয়গুনে সমৃদ্ধ এই মিষ্টি মুখের নায়িকা ও অভিনেত্রীর আজ জন্মদিন।
১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর যশোর জেলার শার্শা উপজেলার নাভারণে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। আজকের এই দিনে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর জন্য রইলো শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
শাবনূরের প্রকৃত নাম কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর। চলচ্চিত্রে এসে ধারণ করেন ‘শাবনূর’ নাম। কিংবদন্তি পরিচালক এহতেশামের ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘চাঁদনী রাতে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন তিনি। ছবিটি তেমন ব্যবসায়িক সফলতা অর্জন করতে পারেনি। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জহিরুল হক পরিচালিত ‘তুমি আমার’ ছবি দিয়ে পরিচিতি পান তিনি। এরপর সালমান শাহ’র সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক হিট ছবি উপহার দেন তিনি। গত তিন দশকে দাপটের সঙ্গে ঢাকাই ছবিতে নায়িকা হিসেবে পদচারণা করছেন। এখনও সমুজ্জ্বল তিনি।
শাবনূর সেই নব্বই দশকের শুরুর দিকে সুপারস্টার নায়ক সালমান শাহ’র বিপরীতে কাজ করে অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন। সালমান-শাবনূর জুটি তখন ছিলো সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি। এই জুটি ১৯৯৫ সালে স্বপ্নের ঠিকানা, ১৯৯৬ সালে স্বপ্নের পৃথিবী, তোমাকে চাই, ১৯৯৭ সালে শিবলি সাদিক পরিচালিত আনন্দ অশ্রুসহ অনেক সিনেমা করেন।
পরবর্তীতে নায়ক রিয়াজ ও শাকিব খানের সঙ্গেও জুটি বেঁধে সফল ছবি উপহার দেন তিনি। রিয়াজের বিপরীতে ১৯৯৭ সালে মন মানে না ও তুমি শুধু তুমি এবং ১৯৯৯ সালে অভিনীত ভালবাসি তোমাকে ও বিয়ের ফুল ছায়াছবি করেন।
শাবনূর সংশ্লিষ্ট আরও খবর
⇒ প্রস্তুতি নিয়েই জাজের ‘কাঁটাতারের বেড়া’ ছবিতে ফিরছেন শাবনূর
⇒ ফেইসবুক ইনস্টাগ্রাম ফিরে পেলেও ইউটিউব হারালেন শাবনূর
২০০০ সালে রিয়াজের বিপরীতে মতিন রহমান পরিচালিত নারীর মন ও এ মন চায় যে, এফ আই মানিক পরিচালিত এ বাঁধন যাবেনা ছিঁড়ে, জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি, সাঈদুর রহমান সাঈদ পরিচালিত এরই নাম দোস্তি, শাকিব খানের বিপরীতে এফ আই মানিক পরিচালিত ফুল নেবে না অশ্রু নেবে এবং ইস্পাহানি আরিফ জাহান পরিচালিত গোলাম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। নায়ক ফেরদৌসের সাথেও করেন সফল কিছু ছবি। দাপুটে অভিনেতা মান্নার সঙ্গেও জুটি বেঁধে কাজ করেন তিনি।
এছাড়া শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ, প্রেমের তাজমহল, স্বপ্নের বাসর, সুন্দরী বধূ, হৃদয়ের বন্ধন, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, মিলন হবে কত দিনে, ভালবাসা কারে কয়, ও প্রিয়া তুমি কোথায় চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয় করেন তিনি। ২০০০ থেকে ২০০২ সালের চলচ্চিত্রের জন্য তিনি টানা তিনবার যথাক্রমে ২০০০ সালের সকল চলচ্চিত্র, ২০০১ সালের শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ এবং ২০০২ সালের স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ চলচ্চিত্রের জন্য তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন।
২০০৫ সালে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত দুই নয়নের আলো ছায়াছবিতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন শাবনূর। ভালবাসি তোমাকে চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালের চলচ্চিত্রের জন্য পর্যন্ত টানা দুইবার তারকা জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া মোল্লা বাড়ীর বউ চলচ্চিত্রে পারুল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য লাভ করেন দর্শক জরিপে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার।
চিত্রনায়িকা শাবনূরের এখনকার খবর
→ সাবধান করেছেন শাবনূর, না শোধরালে আইনি ব্যবস্থা
→ আমরা গর্বিত আমাদের একজন শাবনূর আছেন: কনকচাঁপা
২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী অনিক মাহমুদকে বিয়ে করেন শাবনূর। অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন ও নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০১৩ সালে ছেলে সন্তানের মা হন। তার ছেলের নাম আইজান নিহান। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি শাবনূর-অনিকের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়।
শোনা গেছে, দীর্ঘ বিরতির পর জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘কাঁটাতারের বেড়া’ ছবি মাধ্যমে আবার চলচ্চিত্রে ফিরবেন এই নারী সুপারস্টার।
বেশ কিছুদিন আগে ইনস্টাগ্রাম, ফেইসবুক ও ইউটিউবে সক্রিয় হয়েছিলেন। এরপর তিনি হ্যাকিয়ের শিকার হন। ইনস্টাগ্রাম ও ফেইসবুক ফিরে পেলেও ইউটিউব চ্যানেলটি হারান তিনি। এই জন্মদিন উপলক্ষে তার নতুন চ্যানেল নিয়ে তিনি হাজির হবেন বলে জানা গেছে।
ফেইসবুক পেইজ
ইনস্টাগ্রাম