‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো….। আর লেখা যাচ্ছে না। তবে এরপর কবি নজরুল লিখেছিলেন ….এলো খুশীর ঈদ। নজরুল ছিলেন একজন কবি, ভাবের হাটে বেঁচাকেনা করতেন তিনি। বাঙালি মুসলমানের মধ্যে ত্রিশদিন রোজা রাখার পরে ঈদের চাঁদ দেখে যে আনন্দ তা দেখে তিনি লিখেছিলেন এই গান। ঈদের চাঁদ উঠলেই বাঙালি গেয়ে উঠে গানটি। তবে এবারের করোনাক্রান্ত বিশ্বে ঈদ কি আনন্দ নিয়ে এসেছে? এদিকে কবি কাজী নজরুলের আজ ১২১তম জন্মবার্ষিকী।
ঈদের দিন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরণ করছে বাঙালি। কবির জন্মদিনে এবারের ঈদ এক অন্যরকম আনন্দ নিয়ে আসতে পারতো। তবে ঈদের দিন কবির জন্মদিন পালন হচ্ছে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায়। সরকারি ও বেসরকারিভাবে অনলাইনে কবিকে স্মরণ করা হচ্ছে। এ স্মরণ আয়োজনে রয়েছে নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক ও চলচ্চিত্র। থাকছে আলোচনা। ঈদের অনুষ্ঠানেও একই আবহ। নজরুলে গানে, কবিতায় ঈদের লকডাউন আয়োজন।
এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে কবি নজরুলের জন্মদিনে ‘জাগো অমৃত পিয়াসী’ শীর্ষক একটি বিশেষ অনুষ্ঠান বিটিভিসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে একযোগে সম্প্রচার করা হয়েছে।
নজরুল গীতির সাথে নৃত্যানুষ্ঠানে ছিলেন দেশ-বিদেশের নৃত্যশিল্পীরা। করোনাকালে ঘরে বসে নাচের ভিডিও তৈরি করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রদর্শিত করা হচ্ছে। এদিকে সামাজিক রীতি মেনে পাড়া-মহল্লার মসজিদগুলোতে হয়েছে ঈদের নামাজ। ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহগুলো করেছে খাঁ খাঁ। নামাজ পড়েই ঘরে ঢুকে গেছে সবাই। আতঙ্ক, ভীতি ও মনমরা ঈদ। কারও কারও স্বজন হারানোর ঈদ, কারও স্বজনবিহীন ঈদ।
এদিকে সার্চ ইঞ্জিন গুগল তাদের হোমপেজে আজ এক বিশেষ ডুডলে কবিকে স্মরণ করছে।
কাজী নজরুল ইসলামের ১২১তম জন্মবার্ষিকী আজ। কবির জন্ম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ। পাশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম ও শৈশব। তাঁর বাবার নাম কাজী ফকির আহমেদ, মায়ের নাম জাহেদা খাতুন।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কবিকে জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করেন। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র ইন্তেকাল করেন আমাদের জাতীয় কবি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
এই করোনাকালের ঈদে কবির জন্মতিথিতে ভক্তিভরে স্মরণ করছি….।