যে কোন শিল্প মাধ্যম প্রতিকূল সময়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে : রেজা গালিব
প্রকাশের সময় :
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও টেলিভিশন ব্যাক্তিত্ব আকা রেজা গালিব। ২০১৮ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত প্রথম রহস্য থ্রিলার ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত সিনেমা ‘কালের পুতুল’। আগাথা ক্রিস্টির রহস্য উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটির চিত্রনাট্য করেছেন নাসিফুল ওয়ালিদ। পরিচালকের নিজের ভাষ্য, তিনি নিজে বিখ্যাত নির্মাতা আলফ্রেড হিচকক দ্বারা প্রভাবিত। আর তাই তিনি তার প্রথম নির্মাণেই রহস্য থ্রিলার বেছে নিয়েছেন। সিনেমাটি দেশে ও বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া তিনি সরকারি অনুদানে ‘ধড়’ নামে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল আই’তে কর্মরত আছেন। করোনাকালীন সময়ে চলচ্চিত্র ও নাটকের নানা বিষয় নিয়ে কালচারাল ইয়ার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
কালচারাল ইয়ার্ড : এই করোনাকালীন গৃহবন্দী সময়ে আপনার পরিবর্তীত জীবনাচরণ ও জীবনবোধ সম্পর্কে জানতে চাই। রেজা গালিব : পেশাগতভাবে আমি একজন গণমাধ্যমকর্মী হবার কারণে এই করোনাকালেও আমাকে নিয়মিত অফিস করতে হয়েছে। ফলে টানা গৃহবন্দী থাকার অভিজ্ঞতা আমার হয় নি। তারপরও আর সবার মতোই এই পরিবর্তিত সময়ের আঁচ আমার উপরে এসে পড়েছে। বিশেষ করে পরিবারের সব সদস্য মিলে বাড়ির কাজ করার অভিজ্ঞতাটা নতুন। আর এর সাথে নতুন করে উপলব্ধি করেছি, সব কিছুতে ভারসাম্য থাকা কতটা প্রয়োজন। প্রগতি আর প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য না থাকার মাশুল আজ আমাদের গুনতে হচ্ছে। সেই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনাটাই এখন আমাদের একমাত্র কাজ।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। এই সময়ে চলচ্চিত্র বা নাটক কি ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন। রেজা গালিব : চলচ্চিত্র, নাটক বা যে কোন শিল্প মাধ্যম প্রতিকূল সময়ে সবচাইতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে বলে মনে করি। আর সেটা কিন্তু দেখাই যাচ্ছে। অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর্শক আকৃষ্ট করেছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখতে পাচ্ছি যে, সবাই তাদের পছন্দের সিনেমা, নাটক বা বই নিয়ে আলাপ করছে। এই সবই ইতিবাচক।
কালচারাল ইয়ার্ড : এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দি হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় কি মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন কিনা। রেজা গালিব : আমাদের দেশে বেশিরভাগ সৃজনশীল মানুষকেই পেশা হিসেবে অন্য কিছুকে বেছে নিতে হয়। আর পেশাগত ব্যস্ততার চাপে সৃজনশীলতাকে দূরে সরিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু এই করোনাকালীন অবসর একটা সুযোগ এনে দিয়েছে। আর তারা তাদের সেই সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের পিছনে সময় দিচ্ছেন। এই্ ব্যাপারটা আসলে খুবই আশাব্যঞ্জক। আমার একটাই আশা আবার পেশাগত ব্যস্ততা ফিরে এলেও তারা এই চর্চাটা চালিয়ে যাবেন। পেশা ও সৃজনশীলতার মধ্যে একটা সমন্বয় সাধন করবেন।
কালচারাল ইয়ার্ড : অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে? রেজা গালিব : প্রতি বছর একবার আমরা পুরো পরিবার কোথাও ঘুরতে যাই। সেই স্মৃতিগুলোই বেশী মনে পড়ছে।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন। রেজা গালিব : সাংস্কৃতিক মানুষেরা যে কোন সময়ে যেভাবে অগ্রণী ভুমিকা পালন এসেছে। করোনা পরবর্তী সময়েও একই ভুমিকা রাখবে বলে মনে করি।
কালচারাল ইয়ার্ড : আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। রেজা গালিব : আপনাকে ও কালচারাল ইয়ার্ডকেও ধন্যবাদ।