চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা অন্ত আজাদ। পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র ‘আহত ফুলের গল্প’ নির্মাণ করে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। তিনি টেলিভিশন ফিকশন ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছেন। তাঁর নির্মিত উল্লেখযোগ্য টেলিভিশন ফিকশন ‘আকু মিয়া ও অবশিষ্ট আপেলের গল্প’, ‘তিথি তুমি ভালো থেকো’ ও ‘হলুদ পাতার কাব্য’। এছাড়া তিনি মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমায় অভিনয় করেন। ‘অন্য মুক্তিযোদ্ধা’, ‘জ্বীনের বাদশা সরফরাস’, ‘মানুষ বদল’, ‘ফেরার কোন পথ নেই’সহ বেশ কয়েকটি টেলিভিশন নাটকেও তিনি অভিনয় করেছেন। করোনাকালীন কালচারাল ইয়ার্ডের সঙ্গে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
কালচারাল ইয়ার্ড : এই গৃহবন্দী সময়ে আপনার পরিবর্তীত জীবনাচরণ ও জীবনবোধ সম্পর্কে জানতে চাই।
অন্ত আজাদ : বন্ধু-বান্ধব, প্রিয়জনদের সাথে শারীরিক দূরত্বের বিষয়টি কিছুটাতো মানসিক চাপ তৈরি করেছেই। এটা মেনে নেয়া ছাড়া কোন উপায়ও নেই! করোনার আগ পর্যন্ত সিনেমা হলে গিয়ে নিয়মিত সিনেমা দেখতাম, সেটা হচ্ছে না গত তিন মাস। ঈদেও সিনেমা হলে সিনেমা না দেখতে পারায় মানসিকভাবে খুব কষ্ট পেয়েছি। তবে নেটে বেশ কিছু ক্ল্যাসিক সিনেমা এবং মানসম্মত ওয়েব সিরিজ দেখেছি। এছাড়া পূর্বনির্ধারিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বই পড়া শেষ করেছি- যেটা স্বাভাবিক সময়ে, সময়ের অভাবে পড়া হয়ে উঠিছিলো না। এছাড়া একটি চিত্রনাট্যের প্রাথমিক ড্রাফটও শেষ করেছি। এসব করোনাকালীন সময়ে বাড়তি পাওনা। এছাড়াও এখন দু’বেলা ব্যায়াম করি এবং মেডিটেশন করি, যেটা আগে এক বেলা করা হতো।
আর এই অনিবার্য বন্দী সময় আমাকে নিজের দিকে গভীরে তাকাতে বাধ্য করেছে, যা থেকে কিছু নতুন উপলব্ধি তৈরি হয়েছে। এ থেকেই জীবনের ২টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি- যার বাস্তবায়ন আশা করি আগামী এক বছরের মধ্যেই দেখা যাবে।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। এই সময়ে চলচ্চিত্র কি ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন?
অন্ত আজাদ : অনলাইন রিলিজের মধ্য দিয়ে এখনও চলচ্চিত্র তার নিজস্ব শক্তিতেই আমাদের হৃদয়ের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে যাচ্ছে! এর চেয়ে চলচ্চিত্রের কাছে আর কি চাইতে পারি? আমি তো নিয়মিত চলচ্চিত্রের স্পর্শেই এখনও সজীবতা নিয়েই বেঁচে আছি!
করোনাকালীন সময়ে নির্মাতাদের ভাবনা
⇒ ‘এই সময়ে মানবিক গল্পপ্রধান চলচ্চিত্র মানুষের মনে স্বস্তি দিতে সক্ষম’
কালচারাল ইয়ার্ড : এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দি হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন কিনা?
অন্ত আজাদ : সংকটের সময় মানুষ নিজেকে নিয়ে অনেক বেশি ভাবার সময় পায় বলে নিজের সাথে নিজের যোগাযোগের মাত্রা এবং উপলব্ধি বৃদ্ধি পায়। সে কারণে মানুষের মানবিকতা ও সাংস্কৃতিক বোধ কিছুটা বৃদ্ধি পায় বলেই আমার বিশ্বাস।
কালচারাল ইয়ার্ড: করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য, বিশেষ করে চলচ্চিত্রের মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন?
অন্ত আজাদ : চলচ্চিত্র আরও বেশি ওয়েব নির্ভর হয়ে উঠবে বলে মনে হয়।
কালচারাল ইয়ার্ড : অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে?
অন্ত আজাদ : সজীব, বৈচিত্রময় কৈশোর..!! সে সময়ের আনন্দ-বেদনার মুহুর্তগুলো..
কালচারাল ইয়ার্ড : আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অন্ত আজাদ : আপনাদেরও অনেক ধন্যবাদ।