নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢালিউডের সর্বকালের চিরসবুজ চিত্রনায়ক সালমান শাহ। আজ বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হতো ৫০ বছর। কিন্তু মাত্র ২৬ বছরে থেমে গেছে এই চিরসবুজ নায়কের জীবনঘড়ি। ২৫ বছর আগে প্রয়াত হয়েছিলেন তিনি। তবে তিনি কালোত্তীর্ণ হয়ে আছেন, থাকবেনও চিরকাল। সবার প্রিয় নায়কের জন্মদিনে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা।
সালমান শাহ ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। বাবা কমরউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন একচন আইনজীবি। মা নীলা চৌধুরী ছিলেন সঙ্গীতশিল্পী ও রাজনীতিবিদ।
সালমান আশির দশকের শেষভাগে একটি মিউজিক ভিডিও দিয়ে টিভি পর্দায় আগমন করেন। সেসময় কিছু বিজ্ঞাপণচিত্র ও টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেন তিনি। চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে আরও এক দশক পর। পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিষেক হয় তাঁর।
এই একটি ছবিই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ইমন থেকে তিনি হয়ে উঠেন সালমান শাহ। একের পর এক মুক্তি পেতে থাকে তার অভিনীত হিট সব সিনেমা। চার বছরে ২৭টির মতো সিনেমা করেন তিনি।
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ এর সাফল্যের পর পরিচালক জহিরুল হক ও তমিজউদ্দিন রিজভী সালমান শাহকে নিয়ে নির্মাণ করেন ছবি ‘তুমি আমার’। ১৯৯৪ সালের ২২ মে মুক্তি পায় ছবিটি।
এরপর একে একে মুক্তি পায় সালমান শাহ অভিনীত ছবি শিবলি সাদিক এর ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘মায়ের অধিকার’। জহিরুল হক এর ‘সুজন সখী’। গাজী মাজহারুল আনোয়ার এর ‘স্নেহ’, শফি বিক্রমপুরির ‘দেনমোহর’, দিলিপ সোম এর ‘মহামিলন’, এম এম সরকার ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ ও ‘প্রেম পিয়াসি’, বাদল খন্দকার এর স্বপ্নের পৃথিবী, হাফিজউদ্দিনের আঞ্জুমান, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘কন্যাদান’, মালেক আফসারির ‘এই ঘর এই সংসার’, এম এ খালেক এর ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, জীবন রহমান এর প্রেমযুদ্ধ’, মোহাম্মদ হান্নান এর ‘বিক্ষোভ’, মোহাম্মদ হোসেন এর ‘প্রিয়জন’, মতিন রহমান এর ‘তোমাকে চাই’, শাহ আলম কিরন এর ‘বিচার হবে’, জাকির হোসেন রাজুর ‘জীবন সংসার’, তমিজ উদ্দিন রিজভীর ‘আশা ভালোবাসা’।
সালমান শাহ সম্পর্কিত আরও খবর
⇒ সালমান শাহ থাকবে এই ঘর এই সংসারে
এছাড়া আরও ছবিতে অভিনয় করেন যা সে সময় তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়। এগুলোর মধ্যে বিক্ষোভ (১৯৯৪), স্বপ্নের ঠিকানা (১৯৯৪), মহামিলন (১৯৯৫), বিচার হবে (১৯৯৬), চাওয়া থেকে পাওয়া (১৯৯৬), প্রেম পিয়াসী (১৯৯৭), স্বপ্নের নায়ক (১৯৯৭), বুকের ভিতর আগুন (১৯৯৭) উল্লেখযোগ্য।
ক্ষণজন্মা এই চিত্রনায়ক নিজ গুনেই নিজের সময়কে ছাড়িয়ে গিয়ে এখনও সমান জনপ্রিয় হয়ে আছেন। বাংলা চলচ্চিত্র যতদিন থাকবে এই নায়কের নাম জ্বলজ্বলে থাকবে এই মত চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যা এ নিয়ে এখনও বিষয়টি বিচারাধীন। এই মৃত্যু রহস্যের জট খুলছেইনা। তবে সর্বশেষ পিবিআয়ে রিপোর্টে সালমানের মৃত্যুকে আত্নহত্যা বলাে হয়। তবে এর বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিয়েছে তার পরিবার।
সালমান শাহ’র মৃত্যুর এত বছর পরেও তিনি সমান জনপ্রিয়। তরুণ-তরুণীদের কাছে তিনি এক আইডলের নাম। স্টাইলিস্ট তরুণেরা সালমান শাহকেই আদর্শ মানেন। তিনি স্টাইলিস্ট তরুণদের নতুন চিত্রনায়কদের অনুকরণীয় হয়ে বেঁচে থাকবেন আজীবন।