নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের লোকগানের কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী বারী সিদ্দিকীর প্রয়াণ দিবস আজ। তিনি একইসঙ্গে ছিলেন প্রখ্যাত গীতিকার ও বংশীবাদক। ২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর তিনি চলে যান না ফেরার দেশে।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের সঙ্গীত পরিচালক ও মুখ্য বাদ্যযন্ত্রশিল্পী বারী সিদ্দিকী প্রয়াত কিংবদন্তি সাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিনে’ সিনেমার মাধ্যমে হয়ে ওঠেন প্লে-ব্যাক সিঙ্গার। এর মাধ্যমে তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষেও চলে আসেন। এই শিল্পীর প্রয়াণ দিবসে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা।
বারী সিদ্দিকীর প্রথম গানে হাতেখড়ি মা জহুর-উন-নিসার কাছে মাত্র ৭-৮ বছর বয়সে। তিনি ১৯৯৫ সালে বিটিভির ‘রং-এর বারৈ’ অনুষ্ঠানে প্রথম গান করেছেন।
মায়ের কাছে জীবনের প্রথম যে গানটির সুর তিনি বাঁশিতে তুলেছিলেন, সেই সুর তিনি পরবর্তীতে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করেছেন। এই সুর মানুষের অন্তরে গেঁথে গেছে। সুরটি ছিলো শ্যাম বিচ্ছেদের একটি সুর। কলিটা ছিলো এরকম ‘আষ্ট আঙ্গুল বাঁশের বাঁশি, মধ্যে মধ্যে ছ্যাদা; নাম ধরিয়া ডাকে বাঁশি, কলঙ্কিনী রাধা। এ ছবিতে তিনি ছয়টি গান গেয়েছেন।
তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে বিপুল শ্রোতাপ্রিয় গান, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘পুবালী বাতাসে’, ‘শুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’, ‘ওলো ভাবিজান নাউ বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’ অন্যতম।
১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের নেত্রকোণায় জন্মগ্রহণ করেন বারী সিদ্দিকী। ১২ বছর বয়সে নেত্রকোণার শিল্পী ওস্তাদ গোপাল দত্তের অধীনে গানের আনুষ্ঠানিক হাতেখড়ি। এরপর তিনি গান শেখেন ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষসহ অসংখ্য গুণী শিল্পীর কাছে।
ওস্তাদ গোপাল দত্তের পরামর্শে ক্লাসিক্যাল মিউজিকের উপর পড়াশোনা করেছেন এই শিল্পী। বাঁশির প্রতি তিনি ছিলেন বিশেষভাবে আগ্রহী। তিনি ভারতের পুনে গিয়ে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছেও তালিম নিয়েছেন। বাংলাদেশের লোকগান ও আধ্যাত্মিক গানের শিল্পী ও বংশীবাদক হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন তিনি।
বারী সিদ্দিকী ২০১৪ সালে প্রবাস প্রজন্ম জাপান সম্মাননা ও সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস অর্জন করেন।