নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করে শুরু হচ্ছে ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’এই স্লোগানে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের আয়োজনে এ উৎসব শুরু হচ্ছে ১৬ জানুয়ারি। এ উৎসব চলবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়ে উৎসব আয়োজক কমিটির পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল এ বিষয়টি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উৎসবের চেয়ারপারসন কিশোয়ার কামাল, ম হামিদ, চলচ্চিত্র জুরি বোর্ডের সদস্য মইনুদ্দিন খালেদ, চিত্রনায়ক ফেরদৌসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আহমেদ মুজতবা জামাল জানান, আগামী ১৬ জানুয়ারি শনিবার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হোসেন এমপি এবং বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার মি. বিক্রম কে দোরাইস্বমী।
ছবিগুলোর ভ্যানু নির্ধারণ করা হয়েছে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, শিল্পকলার নন্দন থিয়েটার (মুক্তমঞ্চ), বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স এবং সীমান্ত স্কয়ার সিনেপ্লেক্স।
উৎসবে উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হবে ‘স্প্রিং ব্লোসম’। সুজান্না লিনডন সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন। একজন টিনেজ তরুণীর সঙ্গে একজন প্রবীণের জাগতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি। ২০২০ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রতিযোগিতা করে।
বরাবরের মত এবারের উৎসবেও এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস্, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম ও উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগে প্রদর্শিত হবে ৭৩টি দেশের মোট ২৩৫টি চলচ্চিত্র।
এবারের উৎসবে এবারই প্রথম ‘লিজেন্ডারি লিডারস হু চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘ট্রিবিউট’ নামে আরও দু’টি নতুন বিভাগ সংযুক্ত করা হচ্ছে।
এগুলোতে রয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য (৭০ মিনিটের বেশি) চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১০৭টি, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১২০টি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আছে ৪১টি যার মধ্যে ৩৩টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন এবং ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য।
চলচ্চিত্র দেখার নিয়মাবলী:
১. জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তন: সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। এর বাইরে, সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটমূল্য ৫০ টাকা।
২. কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন: এখানে সকাল ১০টা থেকে শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হবে। যেখানে অভিভাবকরাও শিশুদের সঙ্গে এই চলচ্চিত্রগুলো বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া, সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। এর বাইরে, সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটমূল্য ৫০ টাকা।
৩. জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন: এই মিলনায়তনের সব প্রদর্শনী সবাই বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় আগে আসলে দেখবেন ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে।
৪. শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা: এখানের প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত। আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় আগে আসলে দেখবেন ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে।
৫. শিল্পকলার নন্দনমঞ্চ: এখানের প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত।
এবারের উৎসবে মিলনায়তনের পাশাপাশি অনলাইনেও চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ রয়েছে। অনলাইন প্লাটফর্ম লাগভেলকিডটকম সিনেমা প্রদর্শন করবে।
এবারের উৎসবে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস।
উৎসব পার্টনার হিসেবে আছে- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার, নরওয়েজিয়ান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হাগুসেন্ড, রিলিজিওন টুডে ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ঢাকা ক্লাব লিমিডেট, বালিক আর্ট, চ্যানেল আই, দুরন্ত টিভি, একাত্তর টিভি, একসন এইড, ক্লাউড লাইভ, লাগ ভেলকি এবং সেন্স ফর ওয়েভ।