কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
গেলো মাসে করোনা পজেটিভ হয়েছিলেন। কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে করোনা নেগেটিভ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি। ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষায় পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শ্বাসকষ্টজনিত কারণে তিনি চলে গেলেন চিরতরে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে ইশরাত শামীম অনন্ত।
ইশরাত শামীম অনন্ত জানান, গত মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাঁর বাবা সাজেদুল আউয়াল। ১৯ মার্চ করোনা নেগেটিভ হলে বাসায় নিয়ে আসা হয় তাঁকে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন এখন তিনি শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ। তিনি সুস্থই ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু তাঁর আগেই তিনি চলে যান সবাইকে ছেড়ে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় কাঁটাবন মসজিদে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে হবে সাজেদুল আউয়ালকে দাফন করা হবে বলে পরিবার থেকে জানানো হয়েছে।
সাজেদুল আউয়াল ছিলেন একাধারে একজন নাট্যকার, চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক ও শিক্ষক। ১৯৭৩ সালে মঞ্চের নেপথ্যকর্মী হিসেবে ঢাকা থিয়েটার-এ কাজ শুরু করেন । চলচ্চিত্র নিয়ে অসংখ্য গবেষণা ও লেখা আছে তাঁর। তিনি ‘ছিটকিনি’ নামে সরকারি অনুদানে একটি চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেন। যা ২০১৭ সালে মুক্তি পায়।
ঋত্বিকমঙ্গল, সত্যজিতের স্রষ্টাবৃত্তি, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের ইতিবৃত্ত, মৃণালমানস তাঁর চলচ্চিত্র বিষয়ক গবেষণাগ্রন্থ। এছাড়া তিনি বাংলা নাটকে নারী-পুরুষ ও সমাজ, চলচ্চিত্রকলা, চলচ্চিত্রকলার রূপ-রূপান্তর, চলচ্চিত্রচর্যাসহ অনেক বই রচনা করেছেন।
২০০৯ সালে ‘ঋত্বিক ঘটকের চলচ্চিত্র : সমাজবাস্তবতা ও নির্মাণভাবনা’ গবেষণার জন্য তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ফিলসফি উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।
তিনি শহীদ আলতাফ মাহমুদ সংগীত বিদ্যা নিকেতন, সিনে আর্ট সার্কেল, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদ এবং বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি ২০০৯-১০ সালে বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ড ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১২-এর জুরি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বাছাই কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ জার্নাল-এর নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। তিনি চলচ্চিত্র বিষয়ে শিক্ষকতাও করেছেন।