কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
আজ সারাদিন ছিলো বৃষ্টিমুখর। সেই বৃষ্টিমুখর দিনে ভিজে স্বজন-বন্ধু ও ভক্তদের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় শেষ বিদায়ের পথে হেঁটেছেন গণমানুষের শিল্পী। শ্রাবনের ধারায় ভিজে চিরবিদায় নিলেন ফকির আলমগীর। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে শেষনিদ্রা গেলেন তিনি।
শনিবার দুপুর ১২টায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে শহীদ মিনারের কৃষ্ণচূড়ার নিচে নিয়ে আসা হয় ফকির আলমগীরের মরদেহ। এ সময় কঠোর বিধিনিষেধ ও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ফুলের তোড়া হাতে বন্ধু-সৃহৃদরা এসে উপস্থিত হয় তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান রাজনীতিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, নৃত্যশিল্পী সংস্থা, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন রাজনীতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শেষ শ্রদ্ধা জানায় ফকির আলমগীরের প্রতি।
ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য পাঠান রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীপরিষদ সদস্যরাসহ অনেকে। শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
ফকির আলমগীরের সহধর্মিণী সুরাইয়া আলমগীর ও ছোট ভাই ফকির সিরাজ এ সময় আগত সকল সুহৃদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব ঝুনা চৌধুরীসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিরা বক্তব্য রাখেন।
এরপর শহীদ মিনার থেকে তাঁর মরদেহ খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে দাফন সম্পন্ন হয়। দাফনের পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপসের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর আগে খিলগাঁও পল্লীমা সংসদ মাঠে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
স্বাধীন বাংলা বেতারের এই কন্ঠযোদ্ধা একুশে পদকপ্রাপ্ত গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর গত শুক্রবার ২৩ জুলাই রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে মারা যান।
১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় দিনটিতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফকির আলমগীর। গণআন্দোলনের কর্মী থেকে তিনি গণসঙ্গীতের অগ্রপথিক হিসেবে তিনি মেহনতি মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন আজীবন।