কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
কলকাতায় শুরু হয়েছে চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব। শনিবার ২৯ অক্টোবর ঐতিহ্যবাহী নন্দনে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রথমদিন এই উৎসবে প্রদর্শিত হয় দেশের বহুল আলোচিত সিনেমা ‘হাওয়া’।নন্দন-১-এ দুপুর ১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়। আর হাওয়ার জোয়ারে যেনো ভেসে গেলো কলকাতা। সিনেমাটি দেখতে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এমনকি নিরাপত্তা লাইন ভেঙে মানুষের উপচেপড়া ভিড় প্রত্যক্ষ করেছে নন্দনবাসী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, নন্দন-১-এ দুপুর একটায় প্রদর্শিত হয় ‘হাওয়া’। কিন্তু দর্শকের চাপে নন্দনের প্রধান গেট সকাল ৯টায় খুলে দেওয়া হয়। এর আগে বাইরের রাস্তায় দেখা যায় দীর্ঘ সারি। গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই সবাই হাওয়ার বেগে দৌড়ে গিয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে হাউসফুল! এই দৌড়েও যারা প্রথম শো দেখতে পারেননি, তাদের জন্য সন্ধ্যায় আরেকটি শো-য়ের ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নন্দন-২-এ ও সবশেষ ২ নভেম্বর নন্দন-২-এ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দেখা যাবে ‘হাওয়া’ সিনেমাটি। এ শোগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রবেশে লাগবেনা কোনো টিকিট।
‘হাওয়া’ নির্মিত হয়েছে সমুদ্রে ভাসমান মাছ ধরার একটি ট্রলারকে ঘিরে। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, নাসিরউদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল, সুমন আনোয়ার প্রমুখ।
গত ২৯ জুলাই মুক্তি পায় হাওয়া সিনেমাটি। ছবিটি বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে মুক্তি পায়। কানাডা ও আমেরিকায় রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করেছে ছবিটি। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হয়নি। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এই সিনেমার দারুণ সম্ভাবনা ছিলো।
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের ব্যবস্থাপনায় এই চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কলকাতার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাগৃহ নন্দন-১, ২ ও ৩–এ বাংলাদেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। আগ্রহী দর্শকেরা বিনা মূল্যে ছবিগুলো দেখতে পারছেন।
উদ্বোধনের প্রথম দিনে বাংলাদেশের পাঁচটি চলচ্চিত্র দেখানো হয়। এদিন সন্ধ্যায় নন্দনে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
কলকাতায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের ৩৭টি চলচ্চিত্র দেখানো হবে। এর মধ্যে রয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা, ‘হাওয়া’, ‘পরাণ’, ‘হৃদিতা’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘গুণিন’, ‘গলুই’, ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’, ‘পাপ পুণ্য’, ‘কালবেলা’, ‘চন্দ্রাবতী কথা’, ‘চিরঞ্জীব মুজিব’, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, ‘নোনাজলের কাব্য’, ‘রাতজাগা ফুল’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’, ‘গোর’, ‘গণ্ডি’, ‘বিশ্বসুন্দরী’, ‘রূপসা নদীর বাঁকে’, ‘শাটল ট্রেন’, ‘মনের মত মানুষ পাইলাম না’, ‘ন ডরাই’, ‘কমলা রকেট’, ‘গহীন বালুচর’ ও ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’।
উৎসবে দেখানো হচ্ছে চারটি প্রামাণ্যচিত্র ও বেশকিছু স্বল্পদৈর্ঘ্যে সিনেমা। স্বল্পধৈর্ঘ্যের মধ্যে রয়েছে- ‘ফেরা’, ‘নারী জীবন’, ‘কাগজ খেলা’ ‘ধর’, ‘ময়না’, ‘ট্রানজিট’, ‘কোথায় পাবো তারে’ এবং ‘আড়ং’।
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্র নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত