নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারতীয় বাংলা সিনেমার একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। ষাটের দশক থেকে আশির দশক পর্যন্ত টালিউডের মিষ্টি মুখের জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন। ঢাকাই ছবিতে অভিনয় করেও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রের এ অভিনেত্রী পরবর্তীতে হয়ে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা রাজনীতিক। অভিনেত্রী থেকে নেত্রী হওয়া টালিগঞ্জের মিষ্টি মুখের নায়িকা সন্ধ্যা রায়ের জন্মদিন আজ। তাঁর জন্মদিনে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।
১৯৪১ সালের ১০ এপ্রিল ভারতের নবদ্বীপে মামা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পৈত্রিক নিবাস যশোরের বেজপাড়াতে। সেখানে শৈশব কেটেছে। শৈশবকালে মা ও বাবাকে হারান। দেশ বিভাগের অস্থিরতায় পাড়ি জমান পশ্চিমবঙ্গে। মায়াবী মিষ্টি মুখের কিশোরী ‘মায়ামৃগ’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন কিংবদন্তি নায়ক উত্তম কুমার-এর পাশাপাশি বিশ্বজিতের বিপরীতে। তবে শুরুটা হয়েছিলো ১৯৫৮ সালে রাজেন তরফদারের পরিচালিত ‘অন্তরীক্ষ’ সিনেমার মাধ্যমে।
ঢাকায় দুটি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ভারত বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় ‘পালংক’ ও কাজী জহিরের পরিচালনায় ‘ফুলের মালা’। শাবানার বিখ্যাত বাংলাদেশী ছবি ‘সত্য মিথ্যা’র ভারতীয় রিমেকেও অভিনয় করেন তিনি। তাঁর অভিনীত হিন্দী ছবি একটি ‘আসলী নকলী’। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতি করেন। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্যও তিনি।
তাঁর অভিনীত বিখ্যাত সিনেমা সত্যজিত রায়ের ‘অশনী সংকেত’ এবং তরুণ মজুমদারের ‘থাগিনি’। পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র ‘বাবা তারকনাথ’-ও তিনি অভিনয় করেন। বিশ্বজিৎ এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে রোমান্টিক সিনেমা ‘মনিহার’ এবং বিশ্বজিতের বিপরীতে থ্রিলার সিনেমা কুহেলি’তে তে অভিনয় করেন। এই সিনেমায় তারকায় ভরপুর যেমন ছায়া দেবী, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, সুমিতা স্যানাল এবং সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনয় করেছিলেন।
সন্ধ্যা রায়ের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র: অন্তরীক্ষ, মায়া মৃগ, কঠিন মায়া, আরগ্য, শুভ দৃষ্টি, রক্তপলাশ, নব দিগন্ত, ধুপ ছায়া, বন্ধন, আসলি-নকলি, পলাতক, ভ্রান্তবিলাশ, পুজা কি ফুল, সূর্য তাপ, মনিহার, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, অশনী সংকেত, থাগিনি, পালঙ্ক, বাবা তারকনাথ, খেলার পুতুল, আমার গীতি, পথভোলা, পথ ও প্রাসাদ, নবাব, সত্য মিথ্যাসহ অসংখ্য।
১৯৬৭ সালে সন্ধ্যা রায় পরিচালক তরুণ মজুমদারকে বিয়ে করেন। টালিগঞ্জের ‘সন্ধ্যানীড়ে’ এই দম্পতির বাস।