নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলা গানের সুরের জাদুকর প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার, গায়ক ও সঙ্গীত পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ২০১৯ সালের আজকের দিনে (২২ জানুয়ারি) আমরা হারাই এই মহান সুরস্রস্টাকে। আজ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। কালচারাল ইয়ার্ড পরিবার তাকে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছে।
১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকার আফতাবনগরে জন্ম গ্রহণ করে তিনি। ১৫ বছর বয়সে মাধ্যমিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
যুদ্ধের পর ১৯৭৬ সাল থেকে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল গানে নিয়মিত হন। সঙ্গীত পরিচালনা শুরু করেন ১৯৭৮ সালে। সিনেমার নাম ‘মেঘ বিজলি বাদল’। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকান নি। তিনি তিন শতাধিক সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। স্বাধীনভাবে বেশ কিছু গানের অ্যালবামও তৈরি করেছেন।
তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেললাইনের ধারে’, ‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’, ‘আমার সারাদেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমি তোমারি প্রেমও ভিখার ‘, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘বাজারে যাচাই করে দেখিনি তো দাম’, ‘আম্মাজান আম্মাজান’, ‘আট আনার জীবন’, ‘চিঠি লিখেছে বউ আমার’, ‘জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালবাসা ফুরাবে না জীবনে’, ‘বিদ্যালয় মোদের বিদ্যালয় এখানে সভ্যতারই ফুল ফোটানো হয়’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা হৃদয়ে সুখের দোলা’ অন্যতম।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের আরও খবর
⇒ একজন সব্যসাচী শিল্পী আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল
⇒ চিরনিদ্রায় সুরের জাদুকর আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল
কর্মে স্বীকৃতি হিসেবে মানুষের ভালোবাসা ও ব্যাপক জনপ্রিয়তার পাশাপাশি অনেক সম্মাননাও পেয়েছেন তিনি। সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সেরা গীতিকার হিসেবে চারবার পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার। ২০১০ সালে পেয়েছেন একুশে পদক। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার, সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
২০১৮ সালের মাঝামাঝি তাঁর হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তাঁকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও তিনি রাজি হন নি। সেসময় তিনি বলেছেন, ‘আমি ইচ্ছা করলেই দেশের বাইরে গিয়ে আমার হৃদ্রোগের চিকিৎসা করাতে পারতাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই সুযোগও আমাকে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার দেশপ্রেম আমাকে দেশ ত্যাগ করতে দেয়নি। আমি যেভাবে চেয়েছিলাম, সেভাবেই সবকিছু শুরু হয়েছিল। আমার বুকে ছিল জাতীয় পতাকা এবং পতাকার ওপর ছিল পবিত্র কোরআন।’
২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি রাজধানীর আফতাব নগরে নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কিংবদন্তি এই শিল্পী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।