বিশেষ প্রতিবেদক:
সুন্দর কথা সুন্দর সুর মানুষের মনকে ছুঁয়ে যায়। আর তাই সবাই সুন্দরভাবে কথা বলতে চায়, সুন্দর কথা শুনতে চায়। ছোট বেলা থেকে যাতে ছেলেমেয়েরা সুন্দরভাবে কথা বলতে শেখে, সেজন্য বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের সঙ্গে শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলেন। সবারই চেষ্টা থাকে সুন্দর কথা বলবার জন্য। তবে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা শুধু সুন্দর করেই কথা বলেন না, তাদের কথা হয় শিল্প। হ্যাঁ, তারা বাচিক শিল্পী।
বাচিক শিল্পীরা খুব দ্রুত মানুষের মনে জায়গা নেয়। হয়ে উঠে নিজ অঙ্গনে জনপ্রিয়। বাংলাদেশে দু’জন ব্যাক্তি আছেন যারা শুধু বাচিক শিল্পী না, একে আশ্রয় করে হয়ে উঠেছেন শীর্ষ অভিনয় শিল্পী হিসেবে। তারা হলেন- বরেণ্য অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফা ও অভিনেতা এবং বর্তমান সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এরকম আরও অনেকে বাচিক শিল্পকে আশ্রয় করে জাতীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে রেডিও, টেলিভিশনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা, সংবাদ পাঠসহ বহু ক্ষেত্রে নৈপূণ্যতা প্রদর্শণ করছেন।
আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র আবৃত্তি শিল্পী তথা বাচিক শিল্পী হিসেবেই ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। তাদের মধ্যে গোলাম সারওয়ার ও বীর বরকত অন্যতম। তারা শুধু বাচিক শিল্পী না, তারা এ শিল্পের শিক্ষক। প্রতি বছর কয়েক হাজার বাচিক শিল্পী তাদের হাত ধরে তৈরি হয়।
বাচিক শিল্প-এর আরও খবর
→ কন্ঠশীলনের নিরন্তর যাত্রার পঁয়ত্রিশ বছর
→ বৈঠক’র প্রথম প্রযোজনা ‘কবিতায় আঁকি জীবন’
এবার যাদের আগ্রহ তৈরী হয়েছে বাচিক শিল্পী হওয়ার। তারা যদি বলেন, বাচিক শিল্পী হতে চাই কি করবো? প্রথমে তাদেরকে যেতে হবে মীর বরকত ও গোলাম সারওয়ারের মত বাচিক শিল্পীদের কাছে। নিতে হবে হাতেখড়ি। তাদের পেতে হলে ভর্তি হতে হবে কন্ঠশীলনসহ আবৃত্তি ও বাচিক শিল্প চর্চা প্রতিষ্ঠানে।
এবার কিছু টিউটোরিয়াল দেয়া যাক- জানতে হবে বিশুদ্ধ উচ্চারণ। উচ্চারণ করতে হবে সুস্পষ্টভাবে। এই বৈশিষ্ট্যগুলি অর্জনের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন, অনুশীলন আর অনুশীলন। আর দরকার সজাগ দৃষ্টি। স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনির সঠিক উচ্চারণ ও কৌশল আয়ত্ত করতে হবে। রপ্ত করতে হবে প্রমিত ভাষা ও উচ্চারণ। বাচিক শিল্পের উৎকর্ষ সাধনে দরকার প্রশিক্ষণ আর অনবরত অনুশীলন। তাহলে নিজেকে বাচিক শিল্পী হিসেবে প্রস্তুত করা সম্ভব।
এ বিষয়ে বাক্ শিল্পাচার্য অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস বলেন, বাংলা লিখিতরূপের সংগে বহুক্ষেত্রে তার উচ্চারিত রূপ মেলে না। বাংলা ভাষায় বর্ণ আছে একাধিক কিন্তু তার ধ্বনি প্রতীক এক। আবার বর্ণ আছে একটি কিন্তু তার ধ্বনি একাধিক। আমাদের উচ্চারণে প্রায়শ মহাপ্রাণ বর্ণগুলো অল্পপ্রাণ হয়ে যায়। আমাদের আঞ্চলিকতার সমস্যা। এবং বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের দরদের অভাব, আন্তরিকতার অভাব- অবহেলা, অযত্ন।