চিত্রনায়িকা রোমানা নীড়। লেখাপড়া ও ক্যারিয়ার দু’টোই চলচ্চিত্রকে ঘিরে। খোকন রেজভী পরিচালিত ‘ভালোবাসলে দোষ কি তাতে’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় তার। এরপর তিনি বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন। বৈশ্বিক মহামারী কোভিড ১৯-এর কারণে সকলের মত তিনি হয়ে পড়েছেন গৃহবন্দী। এ সময়ে নিজের এই পরিবর্তীত জীবন ও নানা বিষয় নিয়ে কালচারাল ইয়ার্ডের সাথে কথা বলেন এই অভিনেত্রী।
কালচারাল ইয়ার্ড : এই গৃহবন্দী সময় পরিবর্তীত জীবন কীভাবে কাটছে?
রোমানা নীড় : এই গৃহবন্দী সময়ে আমাদের জীবনটা পরিবর্তীত হয়ে গেছে অবশ্যই। আমরা আগের মতো আর বাইরে যেতে পারছি না। বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতে পারছি না। তবে আমাদের এই পরিবর্তীত জীবনে একটা ব্যাপার খুব ভালো হয়েছে আমি বলবো, সেটি হচ্ছে আমরা এ সময়ে প্রচুর পরিমাণে আমাদের পরিবারের লোকজনদের সময় দিতে পারছি। আর নিজেদের ভালোর জন্যই আমাদের ঘরবন্দী থাকতে হবে। যেটা আমাদের জন্য ভালো নয়, সেটা থেকে আমাদের দূরে থাকাই উচিত।
কালচারাল ইয়ার্ড : এই করোনা ভাইরাসের সময়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনের মানুষরা কি ধরণের ভূমিকা রাখছে?
রোমানা নীড় : আমাদের চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলোর মধ্যে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি করোনাকালীন সময়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ সময়ে আমাদের যারা অস্বচ্ছল শিল্পীরা আছেন, তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন আমাদের প্রেসিডেন্ট মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। আমি মনে করি, চলচ্চিত্র শুধু নয়, বিশ্বের সব খাতেই এখন খারাপ অবস্থা। চলচ্চিত্রের শুটিং বন্ধ, হলগুলো বন্ধ। ভবিষ্যতে আমাদের চলচ্চিত্র কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে হয়তোবা। কিন্তু এ সময়ে আমাদের সবাইকে ঘরে সুস্থ থাকাটাই বড় কথা। আমরা এক সময় সবাই মিলে এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আমি মনে করি।
চিত্রনায়িকা রোমানা নীড় সম্পর্কিত আরও খবর :
⇒ চলচ্চিত্র নিয়েই থাকতে চাই: রোমানা নীড়
কালচারাল ইয়ার্ড : এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দি হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় কি মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন কিনা?
রোমানা নীড় : মানুষ এই ইট পাথরের পৃথিবীতে নিজেকে হারিয়ে ফেলিছিলো! এখন আসলে নিজেকে মানুষ খুঁজে পাচ্ছে। নিজেকে ও নিজের পরিবারকে, নিজের আপনজনকে সময় দিতে পারছে। এ সময় নিজের প্রতিভার বিকাশেও মানুষ সময় দিতে পারছে। যেটা আগে চাইলেও তা করতে পারে নাই। এ সময় হয়তো কেউ ভালো গান গাইতে পারে, কেউ ছবি আঁকতে পারে। সো, এ সময়টায় সে তার নিজের খুব ভালো লাগার কোন বিষয় নিয়ে হয়তো কাজ করছে। আমি মনে করি, এটা খুবই ভালো একটা ব্যাপার। এ সময় একজন আরেকজনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। যেমন নিজের পরিবার, স্বজনের সঙ্গে কাজের কারণে হয়তো যোগাযোগ হতো না। এখন সেটা হচ্ছে।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন?
রোমানা নীড় : করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে আমরা একটা আর্থিক সংকটে পড়তে পারি। এটা শুধু যে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তা-ই না, পুরো বিশ্বের প্রতিটি সেক্টরেই এ সমস্যাটা দেখা দেবে। তবে আমি মনে করি, আমদের সবাইকেই করোনা পরবর্তী সময়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে। সবাই মিলে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। তবে যারা ওই সময়ে আর্থিকভাবে ভালো থাকবে, তাদের উচিত যারা সমস্যায় পড়বে তাদের পাশে থাকা।
করোনাকালীন সময়ে তারকাদের ভাবনা
⇒ এই সময়টা নিজেদেরকে গড়ে তোলার : পায়েল মুখার্জি
কালচারাল ইয়ার্ড : অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে?
রোমানা নীড় : অবসরে আসলে অতীতের অনেক কথাই মনে পড়ে যায়। যেমন সেদিন আমি হুমায়ূন আহমেদের ‘লীলাবতী’ উপন্যাসটা পড়ছিলাম। এ সময় আমার দাদার কথা মনে পড়ে যায়। ‘লীলাবতী’র কাহিনীর সঙ্গে আমি আর আমার দাদার ক্যারেক্টারটা অনেকখানি মিলে যায়। এ নিয়ে একটা স্ট্যাটাসও আমি দিয়েছিলাম। এছাড়া এ সময় ছোটবেলার অনেক কথাই মনে পড়ে যায়। অবসরে চিন্তা করার সময় আছে বলেই এগুলো মনে পড়ে যায়। ছোটবেলার খেলার সাথী, বন্ধুদের কথা, এছাড়া আরও অনেক কিছুই মনে পড়ে।
কালচারাল ইয়ার্ড : কালচারাল ইয়ার্ডকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
রোমানা নীড় : কালচারাল ইয়ার্ডকেও ধন্যবাদ।