কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের অন্যতম দিকপাল ঋত্বিক কুমার ঘটকের সিনেমা তিতাস একটি নদীর নাম, জহির রায়হানের দেশপ্রেমের সিনেমা জীবন থেকে নেয়ার মতো সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ নারী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সূর্য সংগ্রাম, সূর্যগ্রহণ, অশিক্ষিত, গোলাপী এখন ট্রেনের মতো কালজয়ী সিনেমায় অভিনয়ে রেখেছিলেন মেধার স্বাক্ষর। সোনালী যুগের সুমিষ্ট হাসির মেধাবী সেই অভিনেত্রীর নাম রোজী আফসারী। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ মাত্র ৫৭ বছর বয়সে পাড়ি জমিয়েছিলেন পরপারে।
আজ বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী রোজী আফসারীর মৃত্যুবার্ষিকী। প্রথমে ছিলেন রোজী সামাদ। আশির দশকের প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করা মালেক আফসারীকে ভালোবেসে বিয়ে করে হয়েছেন রোজী আফসারী। স্ত্রীকে ভালোবেসে এখনও স্মৃতিকাতর পরিচালক মালেক আফসারী কাঁদেন। অনলাইন মাধ্যমে বলেন নিজেদের ভালোবাসার গল্প।
রোজী আফসারীর চেয়ে ২০ বছরের ছোট ছিলেন মালেক আফসারী। এরপরও ভালোবাসার কোন কমতি ছিলনা। নিজেদের ভালোবাসার নিদর্শন বিভিন্ন ছবি এখনও ভক্তদের কাঁদায়-হাসায়।
মালেক আফসারী রোজী আফসারীর মৃত্যুর দিনের সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, চকলেট খেতে খুব ভালোবাসতেন রোজী। মৃত্যুর কিছুক্ষন আগেও চকলেট খাওয়ার আবদার করেছিলেন তিনি। ভালোবাসার মানুষের হাতে চকলেট খেয়ে পরপারে পাড়ি জমান রোজী।
মালেক আফসারী রোজীর সঙ্গে প্রেমের দিনগুলোর কথা অকপটে বলেছেন। মালেক আফসারী স্মৃতিচারণ করেছেন। ১৯৮০ সালে ‘বিনি সুতোর মালা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন রোজী। সেই ছবির প্রধান সহকারী পরিচালক ছিলেন মালেক আফসারী। সেখান থেকে পরিচয় ও পরিণয়। মিডিয়া ও মিডিয়ার সকল গসিপকে পাত্তা না দিয়ে মাকে আফসারীর সঙ্গে পাঁচ বছরের প্রেম। এরপর ১৯৮৫ সালে বিয়ের পিড়িতে বসেন তারা।
শামীমা আক্তার রোজী
১৯৪৬ সালের ২৩ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সালে ‘এইতো জীবন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয়জীবন শুরু। জহির রায়হান পরিচালিত প্রথম রঙিন ছবি ‘সঙ্গম’-এ অভিনয় করেন তিনি।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের কালজয়ী সিনেমা জীবন থেকে নেয়া, তিতাস একটি নদীর নাম, সূর্যগ্রহণ, রুপালী সৈকতে, গোলাপী এখন ট্রেনেসহ প্রায় সাড়ে তিনশ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন রোজী আফসারী।
বন্ধন, রাজা সন্যাসী, জাগো হুয়া সাভেরা, একটুকু আশা, প্রতিকারম বেদের মেয়ে, নীল আকাশের নিচে, কাঁচ কাটা হীরে, রংবাজ, পায়ে চলার পথ, আবার তোরা মানুষ হ, আলোর মিছিল, লাঠিয়াল, অশিক্ষিত, এই ঘর এই সংসারসহ বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন রোজী আফসারী।
১৯৮৬ সালে ‘আশা নিরাশা’ নামের একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন রোজী আফসারী।
১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি। ১৯৭৪ সালে আলোর মিছিল সিনেমায় অভিনয়ের জন্য বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন রোজী আফসারী।
রোজী আফসারীর মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার সঙ্গে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবার তাঁকে স্মরণ করছে।