নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাচিক চর্চা ও আবৃত্তির মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করা সংগঠন কন্ঠশীলন মঞ্চনাটকের মাধ্যমেও নিজেদের কার্যক্রমকে বিস্তৃত করেছে। তাদের নাটকগুলোর মধ্যে ‘যাদুর লাটিম’ অন্যতম।
বিজয়ী মিশরীয় ঔপন্যাসিক নাগিব মাহফুজের “অ্যারাবিয়ান নাইটস অ্যান্ড ডে’জ” অবলম্বনে প্রযোজনাটির নাট্যরূপ দিয়েছেন রাফিক হারিরি এবং নির্দেশনা দিয়েছেন কণ্ঠশীলনের অধ্যক্ষ আবৃত্তিজন মীর বরকত।
মধ্যপ্রাচ্যের পটভূমিতে লেখা হলেও নাট্যকার বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক প্রেক্ষাপট, ব্যক্তিগত দ্বিধাদ্বন্ধ ফুটিয়ে তুলেছেন নাটকে। অদ্ভুতুড়ে কাহিনির সাথে বর্তমান বিশ্বের প্রবহমান ঘটনাবলীর সাযুজ্য ফুটিয়ে তুলতে ফ্যান্টাসি ও রিয়েলিস্টিকের মিশ্রণে ঢেলে সাজানো হয়েছে নাটকটি। এক ঝাঁক তরুণ নাট্যকর্মীর প্রয়াসটি সার্থক করতে সকল কলাকুশলী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।’
‘যাদুর লাটিম’ এক কল্পিত শহরের ইফরিদ-কুফরিদ নামের দুষ্ট জ্বিনের গল্প হলেও বাস্তবতার বাইরে কিছু নয়। মানুষের শিরায় উপশিরায় ঘুরে বেড়ানো ইফরিদ আর কুফরিদ মানুষের মনে সন্দেহ ও অবিশ্বাসের বিষ ঢুকিয়ে এবং ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে নগর জুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে থাকে। সেই চক্রান্তের বলি হয় ব্যবসায়ী সানান, কোটিপতি কারাম, হামদানি, সালিম, তরুণী। কুফরিদের চক্রান্তে গভর্নর খুন হবার পর ইফরিদ কালো যাদু থেকে মুক্ত হয়ে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
প্রায় দেড় ঘন্টার নাটকটির মঞ্চসজ্জা, পোশাক ও আলোক পরিকল্পনায় আছেন ফয়েজ জহির, সঙ্গীত পরিকল্পনা ও সুর সংযোজন করেছেন শিশির রহমান, কোরিওগ্রাফি করেছেন আমিনুল আশরাফ। গান লিখেছেন রাফিক হারিরি ও মীর বরকত।
নাটকে বিভিন্ন চরিত্র রূপদান করেছেন রইস উল ইসলাম, মোস্তফা কামাল, একেএম শহীদুল্লাহ কায়সার, সোহেল রানা, সালাম খোকন, অনন্যা গোস্বামী, জেএম মারুফ সিদ্দিকী, নিবিড় রহমান, আফরিন খান, অনুপমা আলম, রাহনুমা ইসলাম রাখী, মো. আব্দুল কাইয়ুম, লায়লা নজরুল, রুবেল মজুমদার, নিশরাত জেবিন নিশি, শেখ সাজ্জাদুর রহমান, ফাহিম আবরার, আনিকা মৌনি ও তাসিন ইসলাম।
আবৃত্তির সংগঠন হিসেবে পরিচিত হলেও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনভুক্ত কণ্ঠশীলন ১৯৯৩ সাল থেকে নিয়মিত মঞ্চনাটক প্রযোজনা করছে। কণ্ঠশীলন প্রযোজিত প্রথম তিনটি নাটকের নির্দেশনা দেন প্রয়াত সুখ্যাত অভিনেতা খালেদ খান (যুবরাজ)। নাটকগুলো ছিলো হেনরিক যোহান ইবসেনের এ ডলসহাউজ অবলম্বনে শম্ভু মিত্র রূপান্তরিত ‘পুতুলখেলা’, মাস্টার বিল্ডার অবলম্বনে ‘কারিগর’; ইউসুফ ইদরিসের দ্যা ফারফুরস অবলম্বনে ‘ভৃত্য রাজতন্ত্র’।