আশির দশকের শুরুতে বাংলাদেশে নির্মিত হয় প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’। যা সে সময়ের শিশু থেকে সব বয়সী মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এ চলচ্চিত্রের নির্মাতা বাদল রহমান বাংলাদেশের শিশুতোষ চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ হয়ে আছেন। তাঁর দেখানো পথেই এ দেশে বহু শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। তিনি একাধারে চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক, সম্পাদক, সংগঠক ও শিক্ষক। চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার অন্যতম কান্ডারী। ১৯৪৯ সালের ৪ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কালচারাল ইয়ার্ড জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।
বাদল রহমান ভারতের পুনা ফিল্ম ও টিভি ইন্সটিটিউট থেকে চলচ্চিত্র সম্পাদনার উপর ডিপ্লোমা শেষ করে দেশে ফিরে বিটিভিতে যোগ দেন। বিটিভির প্রযোজনা সহকারী ছিলেন তিনি। তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। ষাটের দশকে রাজনীতির উত্তাল সময়ে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ থেকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সবক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। চলচ্চিত্র শিক্ষার প্রসারে তাঁর অসামান্য অবদান।
তিনি বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রতিষ্ঠায় ছিলেন অগ্রণী। ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ প্রতিষ্ঠাসহ চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সামনের সারির নেতা ছিলেন।
জহির রায়হানের হাত ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন বাদল রহমান। ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ ছাড়াও শিশু একাডেমির প্রযোজনায় নির্মাণ করেন ‘কাঁঠাল বুড়ির বাগান’ ও ‘ছানা ও মুক্তিযুদ্ধ’নামে শিশুতোষ চলচ্চিত্র।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে গিয়ে এগিয়ে নিতে সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন বাদল রহমান। স্বপ্ন দেখতেন ফিল্ম আর্কাইভে এর একটি নিজস্ব ভবনের। ফিল্ম আর্কাইভের পাশাপাশি একটি সরকারি স্বতন্ত্র চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছেন। তাঁর স্বপ্নের চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু তা তিনি দেখে যেতে পারেননি।