বাংলা চলচ্চিত্রের নায়ক থেকে মহানায়ক হয়ে ওঠা চিরসবুজ অভিনেতা উত্তম কুমার। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই মাত্র ৫৪ বছর বয়সেই পরপারে পাড়ি জমান তিনি। আর তাই এই দিনটি বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষদের জন্য বেদনাবিধুর। বাংলা চলচ্চিত্রের এই ‘মহানায়ক’-এর মহাপ্রয়ান দিবস আজ। এত বছর পরেও বাংলা চলচ্চিত্রে অমর হয়ে আছেন তিনি। স্মৃতিতে চিরভাস্বর মহানায়কের প্রয়ান দিবসে কালচারাল ইয়ার্ড-এর পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।
উত্তম কুমারের আসল নাম অরুণ কুমার চ্যাটার্জী। ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তার জন্ম। সাধারণ তরুণ থেকে মহানায়ক হয়ে ওঠার পথটা খুব মসৃণ ছিলো না। প্রথমে কলকাতা পোর্টে একজন সাধারণ কেরানি হিসেবে চাকরি শুরু করেন।
অপ্রকাশিত চলচ্চিত্র ‘মায়াডোর’এ অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু হয়। তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নিতীন বসু পরিচালিত ‘দৃষ্টিদান’। আলোচনায় আসেন ‘বসু পরিবার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে।
চলচ্চিত্রের রুপালী পর্দায় ছাড়া মঞ্চেও সফলভাবে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
উত্তম-সুচিত্রা জুটি বাংলা চলচ্চিত্রে অমর। চলচ্চিত্রে সদ্য পা দেয়া সুচিত্রা বা রমার সঙ্গে ১৯৫২ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে উত্তম কুমার। এরপরই উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে উত্তম সুচিত্রা জুটির নাম। সে থেকে এখনও অম্লান এ জুটি। তারা জুটি বেধে অভিনয় করেন কালজয়ী সিনেমা হারানো সুর, পথে হল দেরি, সপ্তপদী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা, সাগরিকাসহ অসংখ্য চলচ্চিত্রে।
বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ে হয়ে ওঠেন তারকা। এরপর করেন ‘চিড়িয়াখানা’ নামের সিনেমা। এ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি অর্জন করেন ভারতের জাতীয় পুরস্কার।
সুচিত্রা সেন, সাবিত্রী আর সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক এক ব্যাপকতা পায় উত্তম কুমারের জীবনে। এই ব্যাপকতা বিস্তৃত আজও।
১৯৮০ সালে ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবির সেটে আকস্মিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন উত্তম কুমার । বাংলা চলচ্চিত্র যেন হঠাৎ করেই কেমন স্থবির হয়ে যায়। আজও তাঁর জায়গা নিতে পারেনি কেউ। তাঁর চলচ্চিত্রগুলো এতটুকু জনপ্রিয়তা হারায়নি।