নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির প্রতি অবিচল আনুগত্যে স্থির থেকে ১৯৮৩ সাল থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চারত সংগঠন হিসাবে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অবিরাম নাট্যচর্চায় মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় ৩৯টি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে ও ইতোমধ্যে প্রযোজনাগুলোর মোট ৯৯৯ টি প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছে। জন্মলগ্ন থেকেই মহাকালের অভিপ্রায় ছিল রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক নানারকম সাম্প্রতিক সংকট উপজীব্য নাট্য প্রযোজনা মঞ্চে নিয়ে আসা। সংগ্রামী নারী আসমানী থেকে আরম্ভ করে মুক্তিযুদ্ধের বিস্তৃত ক্যানভাস, গীতিকার নারী, তাঁত শিল্পের কারিগর, প্রান্তিক জনমানুষ, লিঙ্গ প্রতিবন্ধী, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের মত বিষয় ও নানামাত্রিক চরিত্র উঠে এসেছে মহাকালের নাট্য আয়োজনে।
মহাকাল এর চল্লিশতম প্রযোজনাতেও এর ব্যতয় ঘটবে না। মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় এবার মঞ্চায়নের উদ্যোগ নিয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং পরিবার পরিজনদের সুপরিকল্পিতভাবে নৃশংস হত্যাকান্ড নিয়ে গবেষণালব্ধ মঞ্চ নাটক মহাপ্রয়াণের শোক আখ্যান ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’। অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতিক- মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ও সাধারণ মানুষের সাথে তার নিবিঢ় সম্পর্ক, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাষ্ট্র গঠনে তার সত্যনিষ্ট দুর্বার প্রচেষ্টা রচিত হয়েছে এ পান্ডুলিপিতে।
মহান নেতার হত্যাকারী রাজনৈতিক ও সামরিক বেনিয়া আর খুনীদের মূখোশ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মকে সতর্ক করা এবং খুনীদের ও তাদের অনুসারীদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করার প্রত্যয় তৈরিতে ভূমিকা রাখবে এ নাট্য প্রযোজনা। একটি স্বাধীন ভূখন্ডের মহান স্থপতির প্রতি নৈতিক, মানবিক ও রাষ্ট্রিক দায়বদ্ধতা থেকে নয়মাসের গবেষণালব্ধ এ পান্ডুলিপিটি মঞ্চায়নের জন্য আমরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান রচিত এ নাটকের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফর্মেন্স স্টাডিস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিক রহমান লিয়ন।
২৯ ও ৩০ জুলাই নাটকের কারিগরি প্রদর্শনী হবে জাতীয় নাট্যশালার পরিক্ষণ থিয়েটার হলে। ৩ ও ৪ আগস্ট বাঙালির শোকের মাসে মহাপ্রয়াণের শোক আখ্যান ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ নাটকের উদ্বোধনী ও দ্বিতীয় প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
নাটকটির নেপথ্য শিল্পীরা হলেন- মঞ্চ, আলো, পোষাক ও আবহসঙ্গীত পরিকল্পনায় আশিক রহমান লিয়ন, কোরিওগ্রাফিতে আমিনুল আশরাফ, অ্যানিমেশনে সৈকত নাসির, আবহসঙ্গীত সম্পাদনায় কাজী মোহাইমিনুল হক, পোস্টার ডিজাইন দেবেন্দু উদাস, রূপসজ্জা শিল্পী শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, টিকেট ব্যবস্থাপনায় সৈয়দ লুৎফর রহমান, প্রচার ব্যবস্থাপনায় সৈকত নাসির ও কাজী সাইফ আহমেদ, প্রকাশনা ব্যবস্থাপনায় কানাই চক্রবর্তী ও বুলবুল আহমেদ, সেট ও প্রপস ব্যবস্থাপক রাজিব হোসেন, প্রযোজনা ব্যবস্থাপক ইকবাল চৌধুরী, মঞ্চ অধিকর্তা কবির আহামেদ, প্রযোজনা সমন্বয়ক মো: শাহনেওয়াজ, প্রযোজনা অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসান ও সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে আফজাল হোসেন।
নাটকটিতে অভিনয় করছেন কবির আহামেদ, ফারুক আহমেদ সেন্টু, মোঃ শাহনেওয়াজ, মনিরুল আলম কাজল, পলি বিশ্বাস, সামিউল জীবন, রাজিব হোসেন, শিবলী সরকার, শাহরিয়ার হোসেন পলিন, তারেকেশ্বর তারোক, আহাদুজ্জামান কলিন্স, সুমাইয়া তাইয়ুম নিশা, আরাফাত আশরাফ, স্বপ্নিল, আজহার, পিয়াসী জাহান, কাজী তারিফ, তাজুল রনি, রেদোয়ান, সিয়াম রাব্বি, জুনায়েদ, নূর আকতার মায়া, রাফি, রিফাত হোসেন জুয়েল, আমিনুল আশরাফ, ইকবাল চৌধুরী, মীর নাহিদ আহসান ও মীর জাহিদ হাসান।
নাটকটি নির্মাণে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।