নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী’ কিংবা ‘হয় যদি বদনাম, হউক আরো; আমি তো এখন আর নই কারো’ এই জনপ্রিয় গানগুলো শুনলে যে মুখটি সবার আগে ভেসে ওঠে, তিনি হলেন প্রয়াত কণ্ঠশিল্পী জাফর ইকবাল। গায়ক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেলেও, সেটাকে ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর অভিনয়। অসংখ্য গানের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন প্রায় দেড় শতাধিক চলচ্চিত্রে। হয়ে উঠেছিলেন চিরসবুজ নায়ক কিংবা রূপালি পর্দার ‘রাজপুত্তুর’। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই মানুষ ছিলেন একাধারে কণ্ঠশিল্পী, গিটারবাদক, মুক্তিযোদ্ধা, চিত্রনায়ক। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর এই মহান মানুষটির জন্মদিন। কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারে পক্ষ থেকে জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
১৯৫০ সালের এই দিনে রাজধানী ঢাকার পল্টনে এক সঙ্গীতপ্রিয় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জাফর ইকবাল। ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন প্রখ্যাত সুরকার। বোন শাহনাজ রহমতুল্লাহ কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী। তাই ছোটবেলা থেকে সঙ্গীত চর্চা করতেন তিনি। ১৯৬৬ সালে বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলেন ‘রোলিং স্টোন’ নামের একটি ব্যান্ড দল। তিনি প্রথম প্লেব্যাক করে ‘পিচঢালা পথ’ সিনেমা। এরপর গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান।
১৯৭০ সালে ‘আপন পর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জাফর ইকবাল অভিনয় জীবনে পদার্পণ করেন। এরপর প্রায় দেড় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। যার অধিকাংশই ছিলো ব্যবসা সফল। তার অভিনীতি জনপ্রিয় ছবির মধ্যে ‘অবুঝ হৃদয়’, ‘চোরের বউ’, ‘ভাই বন্ধু’, ‘অবদান’, ‘একই অঙ্গে এত রূপ’, ‘সাধারণ মেয়ে’, ‘ফকির মজনুশাহ’, ‘দিনের পর দিন’, ‘বেদ্বীন’, ‘অংশীদার’, ‘মেঘবিজলী বাদল’, ‘সাত রাজার ধন’, ‘আশীর্বাদ’, ‘নয়নের আলো’, ‘অপমান’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘গৃহলক্ষ্মী’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘নবাব’, ‘প্রেমিক’, ‘ফুলের মালা’, ‘সন্ধি’, ‘সিআইডি’, ‘মর্যাদা’, ‘প্রতিরোধ’ অন্যতম।
জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা অবস্থায় ১৯৯২ সালের ২৭ এপ্রিল ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪১ বছর বয়সে জাফর ইকবাল না ফেরার দেশে চলে যান।