হলিউড থেকে বলিউড পাড়ায় সরব হ্যাসট্যাগ ‘মি টু’ আন্দোলন। এর ঢেউ এসে পড়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু শুধু এখনই নয় অন্যভাবে অনেক আগেই বাংলাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিলো নব্বই দশকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশর্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষকের শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাধ্যমে।
বাংলাদেশে মিডিয়া পাড়া থেকে শুরু করে সর্বত্র নারী যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। এর জন্য অনেক ক্ষেত্রে অনেকেই সরব হয়েছেন। কিন্তু পুঁজির কাছে, ক্ষমতার কাছে অনেক নারীই চুপ থেকেছেন দিনের পর দিন। আর এ আন্দোলনে শুধুমাত্র নারীরা নয়। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেই নারীর পুরুষ বন্ধুর কথা বলা। তার পুরুষ বন্ধু কথা বলতে শুরু করলে অন্য পুরুষ যৌন হয়রানিকারী লজ্জা পাবে।
বাংলা একাডেমিতে তিনদিনব্যাপী আয়োজিত আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবের দ্বিতীয় দিন বিকালে হ্যাসট্যাগ ‘মি টু’ এর যুগে বাঙালী সমাজ অনারীত্ব শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা এ সব বিষয়ে আলাপ করেন। বাংলা একাডেমীর আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ অডিটোরিয়াম এর মূল মঞ্চে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বন্যা মির্জার সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নি সাহা, দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার সাংবাদিক জাইমা ইসলাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নারী আন্দোলনকর্মী রিতা দাশ রায়।
রিতা দাশ বলেন, মি টু শুধু নারীদের নয় একইসঙ্গে পুরুষদেরও আন্দোলন হওয়া চাই। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেই নারীর পুরুষ বন্ধুর কথা বলা। তার পুরুষ বন্ধু কথা বলতে শুরু করলে অন্য পুরুষ যৌন হয়রানিকারী লজ্জা পাবে। মি টু আন্দোলন হওয়া চাই নারীর প্রতিবাদের হাতিয়ার। কিন্তু নারীর নিজেকে আগে হতে হবে শক্তিশালী। আর সেটা শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন দিয়ে নয়, হতে হবে পরিবার, শিক্ষা এবং সমাজ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে।’
জাইমা ইসলাম বলেন, ‘মি টু শুধু সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। একজন নারীকে সেই সঙ্গে এই প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার মানসিকতা ও সাহস রাখতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে মুন্নি সাহা বলেন, ‘শুধু মি টু ভিত্তিক আন্দোলনই নয়, পুরো সমাজ এবং প্রতিটি নাগরিককে সচেতনতার মধ্য দিয়েই একেকটি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর এভাবেই একটি আন্দোলন টিকে থাকতে পারে সময়ের সঙ্গে।’