নিজস্ব প্রতিবেদক:
সদ্যপ্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা, সম্পাদক, শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা সাইদুল আনাম টুটুলকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিবারের ইচ্ছাতে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁর দাফন করা হবে।
সকাল ১১টায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে তাঁকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমধিত করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার পরিবারের সিদ্ধান্ত থাকলেও সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ছিলো। বুধবার সরকারি সিদ্ধান্ত পাওয়ায় বুদ্ধিজীবী কবরস্থানেই তাঁকে দাফন করার সিদ্ধান্ত বহাল আছে বলে কালচারাল ইয়ার্ডকে জানিয়েছেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মামুন।
বেলায়েত হোসেন মামুন জানান, ‘সাইদুল আনাম টুটুল একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ৬ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। পরিবার ও সরকারের সিদ্ধান্তে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। এই মুহূর্তে সাইদুল আনাম টুটুলের মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হয়েছে।’
গুণী এই চলচ্চিত্রকার মঙ্গলবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান। সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় শান্তিনগরে তাঁর নিজ বাসভবনে। সেখানে এশার নামাজের পর তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁর মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর দুই মেয়ে ঐশী আনাম ও অমৃতা আনাম যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।
সম্প্রতি সরকারি অনুদানে ‘কালবেলা’ নামে একটি সিনেমার কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু তা সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি তিনি। ২০০১ সালে আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ‘নারীর ৭১ ও যুদ্ধপরবর্তী কথ্যকাহিনী’ অবলম্বনে ‘কালবেলা’ ছবি নির্মাণ করা হচ্ছে।
সাইদুল আনাম টুটুল ডিরেক্টরস গিল্ডের প্রথম সাধারণ সম্পাদক ও আজীবন সদস্য। তিনি ২০০৩ সালে ‘আধিয়ার’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করে ব্যাপক প্রশংসিত হন। তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র সম্পাদক। তিনি ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ চলচ্চিত্র সম্পাদনার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
এছাড়া তিনি সালাউদ্দিন জাকী নির্মিত ঘুড্ডি, শেখ নেয়ামত আলী নির্মিত দহন, মোরশেদুল ইসলাম নির্মিত দীপু নাম্বার টু-সহ বহু সিনেমার সম্পাদক ছিলেন।