নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন, সাইদুল আনাম টুটুল, মঞ্জুর হোসেন ও এ আর রহমান স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। বুধবার দুপুরে এফডিসিতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির অফিসে এ আয়োজন করা হয়। মেধাবী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক আমজাদ হোসেন, চলচ্চিত্র আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ নির্মাতা ও সম্পাদক সাইদুল আনাম টুটুল, নির্মাতা মঞ্জুর হোসেন ও এ আর রহমান চলতি মাসেই পরলোক গমন করেন। তাদের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
চলচ্চিত্রকার সৈয়দ হাসান ইমাম, ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি ও নাট্য নির্মাতা সালাউদ্দিন লাভলু, অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, নাট্যকার মামুনুর রশীদ, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম খোকন, ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিকসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে এ চার চলচ্চিত্রকারের আত্নার শান্তি কামনা করে দোয়া করেন উপস্থিত সবাই।
আমজাদ হোসেনের নামে এফডিসিতে একটি স্থাপনা করার প্রস্তাব দেন তাঁর বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল। তিনি বলেন, ‘আমরা বাবা সারা জীবন এফডিসিতে কাজ করেছেন। তাঁর জীবনের বড় অংশ কেটেছে এই এফডিসিতে। সারা জীবন তিনি চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করেছেন। ছেলে হিসেবে আমি বাবার জন্য আপনাদের কাছে কিছু চাই। এফডিসিতে আবার বাবার নামে যেন একটি স্থাপনা হয়। আমি চাই বাবা তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকুক। বর্তমান প্রজন্ম তাঁকে নিয়ে যেন চর্চা করতে পারে, এ জন্য আমি আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা করছি। আশা করছি, সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘আমজাদ হোসেনের নামে এফডিসিতে অবশ্যই কোনো স্থাপনার নামকরণ করা হবে। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে আসব। সে ক্ষেত্রে একটি ফ্লোরের নামকরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
এ টি এম শামসুজ্জামান ও মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমজাদ হোসেন বেঁচে আছেন। তাঁর কর্মই তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আমরা এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে পারলে আমাদের চলচ্চিত্র আরো এগিয়ে যাবে। উনি সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি অনেক গল্প, উপন্যাস লিখেছেন। আমরা সেই গল্প উপন্যাস নিয়ে কাজ করলে আমাদের চলচ্চিত্র আরো সমৃদ্ধ হবে। অসাধারণ কাজ আমজাদ হোসেনকে বাঁচিয়ে রাখবে। তিনি চলচ্চিত্রে নিজস্ব একটি ধারা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এই কালজয়ী মানুষগুলো সারা জীবন কাজ করতে পারেন না। একটি সময় এসে উনাদের কাজ কমে যায়। এ জন্য চলচ্চিত্রের মতো মাধ্যমগুলোতে ধস নামে। আমি আশা করব, তরুণ প্রজন্ম আমজাদ হোসেনের কাজ নিয়ে চর্চা করবে।’
সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘এই ডিসেম্বর মাসটি আমাদের জন্য শোকে পরিণত হয়েছে। একের পর গুণী মানুষগুলো আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। উনারা আমাদের কাছে সব সময় অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।’