বাংলাদেশের প্রখ্যাত সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক সত্য সাহার মৃত্যুদিন আজ। ১৯৯৯ সালের ২৭শে জানুয়ারি তিনি পরলোকগমন করেন। তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়, তোমারই পরশে জীবন আমার ধন্য হলো, নীল আকাশের নিচে আমিসহ বহু জীবনধর্মী গানের সুর করেছেন তিনি। অসংখ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনাও করেছেন তিনি।
কীর্তিমান এই সুরকারের মৃত্যুদিনে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা।
১৯৩৪ সালের ২৫শে ডিসেম্বর উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলাধীন নন্দীরহাট জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন সত্য সাহা। তাঁর বাবা নন্দীহাট গ্রামের জমিদার প্রশন্ন কুমার সাহা। ১৯৪৬-১৯৪৮ এর মাঝামাঝি সময়ে সত্য সাহা নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ স্কুল থেকে এণ্ট্রান্স পাশ করেন এবং ১৯৫১ ও ১৯৫২ সালে ভারতের কলকাতা বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র সুতরাং-এ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন। বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা কবরী সত্য সাহার হাত ধরে এ জগতে আসেন। ১৯৭৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে সত্য সাহার প্রযোজনায় ও সুরে ‘অশিক্ষিত’ ছবিটি সম্পুর্ণ এই জমিদার বাড়িতেই চিত্রায়িত হয়। ১৮ দিনে সত্য সাহা বাড়িটিতে শুটিং শেষ করেন। চলচ্চিত্র নির্মাতা দিলীপ বিশ্বাস ‘সমাধি’ নামক ছবি বানাবেন। গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মালিবাগের বাসায় সুরকার সত্য সাহা গানটির সুর করেন এবং এর রেকডিং হয় কাকরাইলের ইপসা রেকর্ডিং স্টুডিওতে। পরবর্তীতে গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়।
তিনি সুতরাং (১৯৬৪), রূপবান (১৯৬৫), ১৩নং ফেকু ওস্তাগর লেন (১৯৬৬), ফির মিলেঙ্গে হাম দোনো (১৯৬৬), ভাওয়াল সন্ন্যাসী (১৯৬৬), চাওয়া পাওয়া (১৯৬৭), আয়না ও অবশিষ্ট (১৯৬৮), মোমের আলো (১৯৬৮), এতটুকু আশা (১৯৬৮), বাঁশরী (১৯৬৮), আবির্ভাব (১৯৬৮), নীল আকাশের নিচে (১৯৬৯), আলিঙ্গন (১৯৬৯), দীপ নেভে নাইসহ (১৯৭০) অসংখ্য ছবিতে সুরারোপ করেন।
আগুনের পরশমণি ও অজান্তে সিনেমায় সঙ্গীত পরিচালনার জন্য ও সুরকার হিসেবে চুড়িওয়ালা ছবিতে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান অর্জন করেন। ২০১৩ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন তিনি।