মানসিক ভারসাম্যহীন নারী রানু মণ্ডল পশ্চিমবঙ্গের স্টেশনে রাত কাটান। ঘুরে ফেরেন স্টেশনের আশেপাশে। লোকজন তাকে ডাকে ‘পাগলি’ বলে। হঠাৎ-ই এই নারী ইন্টারনেটে ভাইরাল হোন লতা মঙ্গেশকরের একটি গান গেয়ে। সেটি ব্যাপক আলোড়ন তুলে পুরো ভারতজুড়ে। এ সুবাধে তিনি ফিরে পেলেন তার পরিবারকে। ডাক পেলেন মুম্বাইতে।
গত ২৮ জুলাই ‘বার্পেতা টাউন দ্য প্লেস অব পিস’ নামের এক ফেসবুক পেজ ভিডিওটি শেয়ার করে । ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে রানু মিষ্টি এবং সুরেলা কণ্ঠে লতা মঙ্গেশকরের গান গাইছেন। সেই গান মুহূর্তেই ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার গানে মুগ্ধ হয়ে শেয়ার হতে থাকে ভিডিওটি।
ভিডিওটি ভাইরাল হলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি পেজটির মালিক কৃষাণ দাস এই নারীর সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাট রেলওয়ে স্টেশনে ধারণ করেন কলকাতার অতিন্দ্র নামের এক ব্যক্তি। পরে তপন নামের আরেক ব্যক্তি ভিডিওটি জুবু নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে দেন। তিনিই সেই পেজে ভিডিওটি শেয়ার করেন।
স্টেশনের প্লাটফর্মে বসে থেকেই খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে রানু মণ্ডলের। কেউ দুই-চার রুপি দিয়ে গেলে সেটি দিয়ে পেট চলে তার। পরিবারে একটি মেয়ে রয়েছে। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে সেই মেয়ের কথাও ভুলে গিয়েছিলেন। মেয়ে সাথী রায়ও মাকে হারিয়ে ফেলেন। রানুর গান ভাইরাল হওয়ার খবর টিভির পর্দায় দেখে মাকে খুঁজে পান সাথী রায়। সোমবার মাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরে আবেগে ভেসেছেন তিনি। স্টেশন থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন বাড়িতে।
অনেকেই তাকে সাহায্যের আশ্বাস দিচ্ছেন। মুম্বাই-দিল্লি থেকে ফোন আসছে। মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের রিয়েলিটি শোতে রানু গান গাওয়ার ডাক পেয়েছেন। দিল্লির একটি সমাজসেবী সংস্থাও যোগাযোগ করেছে রানুর সঙ্গে। রানুর গান শোনার পর তাঁরা ব্যবহার করতে চাইছেন রানুর কণ্ঠ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বাইরে যেতে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার সরকারী পরিচয়পত্র। কোনও পরিচয়পত্র না থাকায় বিমান বা ট্রেনের টিকেট কাটতে পারছেন না তিনি। ভাইরাল হওয়ার পরে রানুর কয়েকজন ভক্ত তাকে পার্লারে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে আধুনিক সাজে সাজিয়ে ছবি তোলা হয়। সেই ছবিগুলোও ফেসবুকে এখন ভাইরাল হয়েছে।