নিজস্ব প্রতিবেদক:
একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর জন্মদিন আজ। হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দীপাড়া গ্রামে ১৯৫৩ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মেছিলেন তিনি।
এইদিনে কালচারাল ইয়ার্ড গুনী এই সঙ্গীতজ্ঞকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।
সুবীর নন্দীর পিতা-সুধাংশু নন্দী। সঙ্গীতপ্রেমী বাবা ছিলেন একজন চিকিৎসক। তার মা পুতুল রানী। পেশাদার না হলেও চমৎকার গান গাইতে পারতেন তিনি। ৬৬ বছরের জীবনে অনেক গান উপহার দিয়েছেন সুবীর নন্দী। তাঁর গাওয়া গানগুলো কালজয়ী হয়ে রবে চিরকাল।
তিনি ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে প্রথম শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নিতে শুরু করেন। তবে তাঁর সঙ্গীতে হাতেখড়ি মায়ের কাছেই। বাবার চাকরিসূত্রে শৈশব কেটেছে চা বাগানে। চা বাগানে খ্রিস্টান মিশনারিদের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন।
এরপর থেকেছেন হবিগঞ্জ শহরে। হবিগঞ্জ শহরে তাদের একটি বাড়ি ছিল, সেখানেই ছিলেন তিনি। সেখানে হবিগঞ্জ সরকারী হাইস্কুলে পড়াশুনা করেন তিনি। এরপর হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজে পড়াশুনা করেন।
সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দীর আরও খবর
⇒ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সুবীর নন্দীর শেষ গান প্রকাশিত
⇒ চলে গেলেন সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী
১৯৬৩ সালে তৃতীয় শ্রেণি থেকেই গান গাইতে শুরু করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে সিলেট বেতারে গান করেন। লোকগানে তাঁর শিক্ষক ছিলেন বিদিত লাল দাশ।
১৯৭০ সালে ঢাকা রেডিওতে প্রথম রেকর্ডিংয়ের মধ্য দিয়ে পেশাদার গায়ক হিসেবে আত্নপ্রকাশ। তাঁর গাওয়া প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’।
সুবীর নন্দী ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। বেতার ও টেলিভিশনের পাশাপাশি অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়েছেন চলচ্চিত্রে। ১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত সূর্যগ্রহণ চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাক করেন।
১৯৮১ সালে তার একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে বাজারে আসে। এছাড়া তিনি গানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ব্যাংকে চাকরি করেছেন।
কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো, আমার এ দুটি চোখ, বন্ধু হতে চেয়ে, আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি, চাঁদের কলঙ্ক আছে, দিন যায় কথা থাকে, একটা ছিল সোনার কন্যা, হাজার মনের কাছে, পাহাড়ের কান্না, বন্ধু হতে চেয়ে তোমারসহ অসংখ্য জনপ্রিয় গান গান উপহার দিয়েছেন তিনি।
তিনি একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন। চারবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়া বাচচাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভুষিত হয়েছেন তিনি।
দীর্ঘদিন কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগে এ বছরের গত ৭ মে মারা যান তিনি। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই এক হাসপাতালে মারা যান এই কিংবদন্তি গায়ক।