বাংলাদেশের প্রথম টেলিভিশন বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ৫৭ বছর পূর্ণ হলো আজ। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশন নামে ঢাকার ডিআইটি ভবনে নিচতলায় জাপানের এনইসি করপোরেশন সহায়তায় সরকারি এই চ্যানেলটির পথচলা শুরু হয়। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের পর এটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এর আগে ১৯৬৭ সালে টেলিভিশন করপোরেশন ও স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন’ একটি সরকারি গণমাধ্যমে রূপান্তরিত হয়।
জন্মলগ্ন থেকে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করছে টেলিভিশনটি। স্যাটেলাইটের যুগে বেসরকারী টেলিভিশনের আধিক্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা ম্লান হলেও ঐতিহ্য রক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে টেলিভিশনটি। সংস্কৃতিবান মানুষের পছন্দের শীর্ষে এখন অবস্থান করছে তারা। গত পাঁচ দশকে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ও নাটক উপহার দিয়েছে তারা। এখনও কিছু জনপ্রিয় অনুষ্ঠান দিয়ে যাচ্ছে টেলিভিশনটি। গত চার দশক ধরে চলছে হানিফ সংকেতের উপস্থাপনায় অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে ১৯৭৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিআইটির ক্ষুদ্র পরিসর থেকে রামপুরার বৃহত্তর পরিমণ্ডলে স্থানান্তর করা হয় কেন্দ্রটি। প্রথম দিকে সাদা-কালো সম্প্রচার দিয়ে হলেও ১৯৮০ সালে রঙিন সম্প্রচারে আসে বিটিভি।
বেশ কিছু জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের মধ্যে যদি কিছু মনে না করেন (১৯৬৭-৬৮, ১৯৮২-৮৫) ফজলে লোহানীর উপস্থাপিত ম্যাগাজিন-জাতীয় অনুষ্ঠান। সেসময় করাচি টেলিভিশনে গর তু বুরা না মানে নামে একটি অনুষ্ঠান চলছিল, এই অনুষ্ঠানটি সেটির সাথে খানিকটা সাদৃশ্যপূর্ণ। কিছুদিন পর লোহানী লন্ডনে চলে যান এবং অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়।
পরে ১৯৮২ সালের দিকে দেশে ফিরে তিনি অনুষ্ঠানটি পাক্ষিকভাবে আবার শুরু করেন। এবার অনুষ্ঠানটিতে বিনোদনের অংশে মূল কাজ করেন হানিফ সংকেত, লোহানী থাকেন প্রতিবেদন অংশে। ১৯৮৫ সালে লোহানীর মৃত্যুর পর অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। বলা হয় এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টেলিভিশনের সর্বপ্রথম রিপোর্টিং শুরু হয়।