নিজস্ব প্রতিবেদক :
জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক ও অভিনেতা কাজী হায়াৎ। সহকারি পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রাঙ্গনে পদার্পন করে ইতোমধ্যেই নির্মাণ করেছেন পঞ্চাশটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, যার অধিকাংশই পেয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। অসংখ্য সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ অভিনেতা হিসেবেও প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। আজ এই গুনী মানুষটির জন্মদিন আজ ।
কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে বর্ষিয়ান চলচ্চিত্রকার কাজী হায়াতের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
জন্মদিনের এই দিনে সংক্ষেপে কাজী হায়াৎ সম্পর্কে জেনে নেই:
জন্ম: ১৯৪৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।
জন্মস্থান: গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের তারাইল গ্রামে।
পরিচয়: খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতা।
কাজী হায়াতের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন
১৯৭৪ সালে পরিচালক মমতাজ আলীর সঙ্গে সহকারি পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার আলমগীর কবিরের সীমানা পেরিয়ে সিনেমায়ও ছিলেন সহকারি পরিচালক।
১৯৭৯ সালে নির্মাণ করেন তাঁর প্রথম সিনেমা দি ফাদার। এরপর ১৯৮০ সালে নির্মাণ করেন দিলদার আলী।
আশির দশকে তিনি বেশকিছু বিখ্যাত সিনেমা নির্মাণ করেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৮২ সালে খোকন সোনা, ১৯৮৪ সালে রাজবাড়ী, ১৯৮৪ সালে মনা পাগলা উল্লেযোগ্য।
নব্বই দশকে নির্মিত তাঁর বিখ্যাত সিনেমা দাঙ্গা (১৯৯১), ত্রাস (১৯৯২), চাঁদাবাজ (১৯৯৩), দেশপ্রেমিক (১৯৯৪), দেশদ্রোহী (১৯৯৭), লুটতরাজ (১৯৯৭), তেজী (১৯৯৮), আম্মাজান (১৯৯৯) উল্লেখযোগ্য। এর মধ্য ত্রাস সিনেমার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। আম্মাজান চলচ্চিত্রের জন্য কাজী হায়াৎ শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
এরপর তিনি একে একে নির্মাণ করেন হিট সিনেমা আব্বাজান (২০০১), পাঞ্জা (২০০১), ইতিহাস (২০০২), অন্য মানুষ (২০০৪), কাবুলিওয়ালা (২০০৬), ক্যাপ্টেন মারুফ (২০০৭), অশান্ত মন (২০১০), ছিন্নমূল (২০১৬) ইত্যাদি। সর্বশেষ ২০২০ সালে মুক্তি পেল তাঁর সুপারহিট সিনেমা ‘বীর’।
পরিচালনা ও চিত্রনাট্যের পাশাপাশি অসংখ্য সিনেমায় তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সেখানেও পেয়েছেন প্রশংসা।
কাজী হায়াত চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে মোট নয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
১৯৮৭ সালে দায়ী কে? সিনেমায় শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে, ১৯৯২ সালে ত্রাস সিনেমায় শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা, ১৯৯৩ সালে চাঁদাবাজ সিনেমায় শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
১৯৯৪ সালে দেশপ্রেমিক সিনেমায় ও ২০০২ সালে ইতিহাস সিনেমার জন্য কাজী হায়াৎ শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
কাজী হায়াৎ আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও অন্যান্য মিলিয়ে মোট ৭৩টি চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রশংসিত কাজী হায়াতের সিনেমা।
কাজী হায়াৎ দাঙ্গা চলচ্চিত্রের জন্য আফ্রো-এশিয়ো সরিডরি কমিটি অ্যাওয়ার্ড কর্তৃক শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।