দশ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী ও চিত্রপরিচালক মেহের আফরোজ শাওন। সেখান থেকে ফিরে স্বেচ্ছায় অভিনেত্রী শাওন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। বাবা-মা আত্নীয়-স্বজন ও সন্তানদের কেউই এখন তার সঙ্গে নেই। সবার থেকে দুরত্ব রেখে ঘরে একাকী দিন যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
ধানমন্ডিতে নিজের ফ্ল্যাট দখিন হাওয়ায় গতকাল বিকেল পাঁচটা থেকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন পর্ব শুরু করেছেন শাওন। আগামী ১৩ দিন তিনি এ অবস্থায় থাকবেন। গণমাধ্যমে নিজেই এ বিষয়টি জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী।
গত ৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় একটি বইমেলায় অংশ নিতে যান শাওন। তিনি প্রয়োজনীয় কাজ শেষে স্থানীয় সময় ১৫ মার্চ নিউইয়র্ক থেকে রওনা দেন। গতকাল সোমবার বাংলাদেশে ফিরেই হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন তিনি।
এর আগে তিনি এ খবর নিজের ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে শেয়ার করেছেন শাওন। তিনি লিখেছেন, ‘বেশ আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া একটি বইমেলায় অংশ নিতে আমেরিকায় গিয়েছিলাম। ওয়াশিংটনে প্রকোপ থাকলেও নিউইয়র্কে করোনা প্রকাশ পায়নি তখনো। ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়ার পরপরই আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে সতর্ক বার্তা জারি হয়ে যায়। তারপর ঘর থেকে বের হইনি। এ বছর মে মাসের ৩০ ও ৩১ তারিখে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন ২০২০-এর সংবাদ সম্মেলন বাতিল এবং মূল অনুষ্ঠানের তারিখ স্থগিত করা হয় তৎক্ষণাৎ। প্রতি মুহূর্তের খবর দেখছিলাম আর ভাবছিলাম বাচ্চাদের কাছে ফিরতে পারব তো? পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় গতকাল দেশে ফিরেছি।
তিনি লেখেন, ‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটার প্রতি এক অজানা ভীতিতে সবাই। মাত্র ১৪ দিন নিয়ম মেনে আলাদা থাকলে পরিবারের অন্য সদস্যরা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিমুক্ত থাকবে, এই কথা ৪/৫ জনকে বোঝাবার চেষ্টা করে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছি আমি। তবে নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম নিউইয়র্ক থেকে রওনা হওয়ার একদিন আগেই। আব্বু-আম্মুর সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলাম, তারা দুজন সায় দিয়েছেন। নিনিত এবং নিষাদ দুজনকেই বুঝিয়ে বলেছেন। পুত্রদ্বয়ও বিষয়টা সুন্দরভাবেই গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও লেখেন, আমি গতকাল থেকে আমার ধানমন্ডির বাসায় সবার থেকে আলাদা (হোম কোয়ারেন্টাইন শব্দটিতে আমারও ভয় লাগে!) আছি। আমার মা’র বাড়িতে থাকা পুত্রদের সঙ্গে ঘণ্টায় ঘণ্টায় ভিডিও কলে কথা হচ্ছে। বাসায় ফেরার পর গতকাল রাতে প্রতিবেশী স্বর্ণা ভাবি জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানাতে চাইলে তাঁকে বারণ করেছি। তিনি বুঝতে পেরেছেন এবং ৩/৪ হাত দূরে দাঁড়িয়ে খাবার দিয়ে গেছেন। দখিন হাওয়া’য় আমার বাসার দরজা প্রথমবারের জন্য তালাবন্ধ রাখা হয়েছে! সবাই ভালো থাকবার চেষ্টা করবেন। অন্যদের ব্যাপারেও সচেতন থাকবেন।’