চলে গেলেন বিশ্ব নাটকের ‘রুদালী’ ঊষা গাঙ্গুলি। বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সিটিতে নিজ বাসায় মারা গেছেন তিনি। বাড়িতে একা থাকতেন তিনি। সেখানেই সকালে তাঁর গৃহকর্মী প্রথম ঊষা গাঙ্গুলীর মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে ধারণা চিকিৎসকদের।
পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যম থেকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। মৃত্যুকালে এই নাট্যকর্মীর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি ছিলেন একাধারে নাট্যকার, চিত্রনাট্যকার ও অভিনয়শিল্পী। হিন্দিভাষী এই অভিনেত্রী কলকাতায় হিন্দি নাটকের এক নতুন ক্ষেত্র তৈরি করেছেন। তবে তিনি বাংলা নাটকেও রেখেছেন অনামান্য স্বাক্ষর। তিনি ঋতুপর্ণ ঘোষ-এর ‘রেইনকোর্ট’ সিনেমার চিত্রনাট্য রচনায় অবদান রেখেছিলেন।
ঊষা গাঙ্গুলি ১৯৪৫ সালে রাজস্থানের যোধপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই নাচ, গান ও নাটকে পারদর্শী হয়ে উঠছিলেন। ভারতনাট্যমে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তিনি। হিন্দি সাহিত্যে মাস্টার্স করেছেন তিনি। হিন্দি সাহিত্য নিয়ে ছিলো তার অগাধ পান্ডিত্য। তিনি কলেজে অধ্যাপনাও করেন।
ঊষা গাঙ্গুলি ১৯৭৬ সালে রঙ্গকর্মী হিসেবে থিয়েটার দল তৈরি করেন। তিনি রুদালি, মহাভোজ, কোর্ট মার্শাল ও অন্তর্যাত্রা’র মতো নাটক নির্দেশনা দেন ও অভিনয় করেন। যেগুলো দেশে বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
পরিচালক, অভিনেত্রী ও একজন সক্রিয় সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন ঊষা গাঙ্গুলি। তিনি সত্তর ও আশির দশকে কলকাতা শহরে হিন্দি থিয়েটারের রূপায়ণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
১৯৯৮ সালে ‘সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি’ থেকে পুরস্কৃত হন তিনি। ‘গুড়িয়া ঘর’ নাটকে অভিনয়ের জন্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারও অর্জন করেন।
ঊষা গাঙ্গুলি নাটকের কাজে গত বছরের অক্টোবরে ঢাকায়ও এসেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ভারত ও বাংলাদেশের নাটক ও সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
বিশ্ব নাটকের ‘রুদালী’ বলা হয় তাঁকে। তিনি বলতেন- ‘থিয়েটার ছাড়া আমার কোনও লাইফ নেই’।