নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার গল্পে তৈরি হলিউডের বহু প্রতিক্ষীত সিনেমা ‘এক্সট্র্যাকশন’ মুক্তি পেলো নেটফ্লিক্সে। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। সিনেমাটি মুক্তির পর ব্যাপক সাড়া পড়েছে মুম্বাই ও ঢাকার দর্শকদের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। চলছে সমালোচনাও।
এর আগে সিনেমাটির ট্রেলার প্রকাশ হলে এ নিয়ে আলোচনা চলে বিস্তর। মুম্বাই ও ঢাকায় সাড়া পড়ার মূল কারণ, ছবিটি তৈরি হয়েছে এই দুই দেশকে কেন্দ্র করেই।
চলচ্চিত্রটির পরিচালক স্যাম হারগ্রেভ। থর খ্যাত হলিউড তারকা ক্রিস হেমসওয়ার্থ সিনেমাটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর চরিত্রের নাম ‘টাইলার রেক’। প্রথমে সিনেমাটির নাম ছিল ‘ঢাকা’। পরে নাম পাল্টে হয়েছে ‘এক্সট্র্যাকশন।’
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করেই এগিয়েছে সিনেমার কাহিনী। কাহিনীতে দেখা যায় মুম্বাইয়ের এক গ্যাংস্টারের ছেলেকে ঢাকার এক গ্যাংস্টার অপহরণ করে নিয়ে আসে। সেই গ্যাংস্টারের ছেলেকে উদ্ধার করতে একজন মার্সেনারি ক্রিস হেমসওয়ার্থকে ঢাকায় পাঠোনো হয়। এরপর সেই ছেলেকে উদ্ধারে একের পর এক অভিযান চালানো হয়।
হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক দুই ভাই জো রুশো ও অ্যান্থনি রুশো ছবিটি প্রযোজনা করেন। সিনেমায় ক্রিস হেমসওয়ার্থ ছাড়াও আরও অভিনয় করেছেন হলিউডের ডেভিড হারবার, ডেরেক লুকসহ অনেকে। ছবিটিতে এছাড়া বলিউডের পঙ্কজ ত্রিপাঠি ও রনদীপ হুদার মতো অভিনেতারাও অভিনয় করেছেন।
জানা যায়, ঢাকা শহরের ভেতরের বেশিরভাগ শুটিং করা হয় সেট করে। ভারতের আহমেদাবাদ ও থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহরে ছবিটির দৃশ্যধারণ করা হয়। সেখানে ঢাকার আদলে ছোট্ট একটি শহরের সেট তৈরি করা হয়। তবে বেশ কিছু দৃশ্য ঢাকার সদরঘাট ও পুরান ঢাকার কিছু এলাকায় ধারণ করা হয়েছে।
‘এক্সট্র্যাকশন’ সিনেমা নিয়ে সরব ঢাকার দর্শকরা
এদিকে ছবিটি মুক্তির পর ঢাকার দর্শকদের মধ্যে বেশ সাড়া পড়ে। এ নিয়ে সরব ঢাকার সিনেমাপ্রেমী দর্শক। ছবিটি দেখার পর নিজেদের মতামত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তারা।
সিনেমাটি কেমন হয়েছে এ নিয়ে করেছেন আলোচনা। তবে ঢাকা শহরের দৃশায়নের ক্ষেত্রে কিছু সমালোচনাও ছিলো দর্শকদের মধ্যে। একজন দর্শকের মতামত ছিলো এরকম ‘ক্রিসের জন্যে এক বুক আশা করে বসে ছিলাম। ঢাকা নিয়ে এত দুর্বল রিসার্চ দেখে হতাশ হয়ে গেছি একদম। ঢাকা মানেই কি সিএনজি?’
জাহিদুল নাহিদ নামে একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, এক্সট্র্যাকশন সিনেমাটি মোটেই বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করেনা। এই ছবির মধ্য দিয়ে পরিচালক বোঝাতে চাইছেন বাংলাদেশ একটি টেরোরিস্ট কান্ট্রি। বরং বাংলাদেশের সেনাবাহিনী একটি শক্তিশালী বাহিনী। জাতিসংঘ শান্তিমিশনে দক্ষতার সঙ্গে সেনাবাহিনী কাজ করেছে। ছবিটি দেখে অনেকে দু:খজনক ইমো দেয়। অনেকে অ্যংগ্রি ইমো ব্যবহার করে।
এছাড়া হলিউডের দৃষ্টিতে ঢাকা যেমন, বাস্তব ঢাকা সেরকম নয় এ ধরণের মন্তব্য করেছেন অনেক দর্শক। তবে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মন্তব্য অনেকেই করেছেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহজাহান শামীম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরণের অনেক মন্তব্য দেখে ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, ‘এক্সট্র্যাকশন’ মুভির পরিচালক ভুলেও আর বাংলাদেশের কাহিনী নিয়া সিনেমা বানাবে না। সবাই এত জ্ঞান দিলে পরিচালনাই ভুলে যাওয়ার কথা।’
এ বিষয়ে গণমাধ্যমগুলোও বলছে, নেটফ্লিক্স তার বাণিজ্য বিস্তারের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ও ভারতকে টার্গেট করে এ সিনেমা নির্মাণ করেছেন। এর কারণ এ অঞ্চল থেকেই নেটফ্লিক্স গত অর্থ বছরে তাদের প্রত্যাশার দ্বিগুন আয় করেছিলো। এর আগে ছবিটির নামও রাখা হয়েছিলো ‘ঢাকা’।