চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ডায়েল রহমান। গুনী চলচ্চিত্রকার ছটকু আহমেদের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হৈমন্তী’ গল্প অবলম্বনে নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র ‘হৈমন্তী’। এছাড়া ইতিহাসভিত্তিক সিনেমা ‘ফরায়েজী আন্দোলন ১৮৪২’ নির্মাণ করেছেন তিনি। বেশ কিছু টেলিভিশন ধারাবাহিক ও টেলিফিল্মও নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে তার ‘তিতুমীর’ ও ‘ঈসা খাঁ’ চলচ্চিত্র দু’টি। কিন্তু এ ছবি দু’টি নির্মাণ চলার মাঝেই হানা দিয়ছে করোনা ভাইরাস। করোনার এ সময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কালচারাল ইয়ার্ডের সঙ্গে কথা বলেন এই চলচ্চিত্র নির্মাতা।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনাকালীন এই গৃহবন্দি সময়ে কীভাবে কাটছে সময়?
ডায়েল রহমান : ঘরবন্দি হয়ে থাকাটা এক ধরণের স্বস্তি… কিন্তু এটা যদি দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে হয়, তাহলে সেটা অস্বস্তিকর লাগবে। অনেক ব্যস্ত থাকার মাঝে হঠাৎ গৃহবন্দি অনেকটা আনন্দই লাগছে। কারণ আমি যেখানে বছরেও বাড়ি এসে অনেক দিন পারি নি, সেখানে আজ দুই মাসের অধিক হতে চললো। এই সময়টাতে খুব আনন্দ পাচ্ছি। বাড়ির কাজ করতে পারছি। ছাদে বাগান করতে পারছি। পাশাপাশি হাতে থাকা কাজগুলোর ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। এই সময়ে নাটক ও চলচ্চিত্র কি ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন?
ডায়েল রহমান : করোনাকালে মানুষের হাতে প্রচুর সময় আছে। অবসর সময়ে তারা সাধারণত বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি নাটক ও চলচ্চিত্র দেখে থাকে। যেহেতু এখন শুটিং বন্ধ, সিনেমা হল বন্ধ, নতুন কোন চলচ্চিত্র মুক্তি পাচ্ছে না। তাই এই মানুষগুলো জন্য ঘরে বসে সচেতনতামূলক নাটক ও চলচ্চিত্র বানানো উচিৎ। আর এসময় তাদের মনের মধ্যে নানা ইতিবাচক ও নেতিবাচক চিন্তার উদয় হয়। ঘরবন্ধি এই মানুষদের এসব চিন্তা নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। যেগুলো এই সময়ে তাদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে একটা বিরাট ভুমিকা রাখবে। এতে করে মানুষ বিনোদনের পাশাপাশি নিজেদেরকে এই পরিস্থিতিতে সতর্কতার সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারে।
নির্মাতা ডায়েল রহমানের আরও খবর :
⇒ তিতুমীর সিনেমার ফার্স্ট লুক প্রকাশ
⇒ তায়েব-ববিকে নিয়ে ডায়েল রহমানের নতুন ছবি ‘ঈসা খাঁ’
কালচারাল ইয়ার্ড: এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দি হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় কি মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন?
ডায়েল রহমান: আমি তো মনে করি অবশ্যই মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে। কারণ এখন মানুষ ব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়েছে অনেকটাই। এ সময় নিজেদের মেধার বিকাশ ঘটাতে অনেক সৃজনশীল কাজ করার সুযোগ আছে।
কালচারাল ইয়ার্ড: করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন।
ডায়েল রহমান: করোনা ভাইরাস পরবর্তী সময়ে একটা নতুন পৃথিবী, নতুন চিন্তার জন্ম হবে বলে আমি মনে করি। সে সময় চলচ্চিত্র অঙ্গনে নতুন নতুন আইডিয়া ও নতুন নতুন কাজ করা যাবে বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু এই বিশ্ব মহামারী যেন খুব দ্রুত শেষ হয় এ জন্য দোয়া করছি। এই সময়ে অনেক টেনশনও হচ্ছে, কাজের ক্ষতি হচ্ছে।
আরও পড়ুন : দুদু মিয়া থেকে ফরায়েজী আন্দোলন: ব্যর্থতার অন্তরালের গল্প
কালচারাল ইয়ার্ড: অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে?
ডায়েল রহমান: এই লকডাউনে আমি এখন গ্রামে আছি। ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো এখন খুব করে মনে পড়ছে।
কালচারাল ইয়ার্ড: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডায়েল রহমান: কালচারাল ইয়ার্ডকেও অনেক ধন্যবাদ।