‘শুটিং না করে ঘরে থাকার নীতিতে অটল থাকার কোনো বিকল্প নেই’
প্রকাশের সময় :
চলচ্চিত্র নির্মাতা রফিক সিকদার। ২০১৬ সালে তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা ‘ভোলা তো যায় না তারে’ মুক্তি পাওয়ার পর দর্শক মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পায় তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‘হৃদয় জুড়ে’। এর আগে তিনি বেশ কিছু টেলিভিশন নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মাণ করেন। গত বছরের শেষের দিকে আরবিএস টেক লিমিটেড প্রযোজিত তার তৃতীয় ছবি ‘বসন্ত বিকেল’-এর শুটিং শুরু করেন। টানা শুটিংয়ের মাধ্যমে গান বাদে ছবিটির কাজ প্রায় শেষ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে নানা বিষয় নিয়ে কালচারাল ইয়ার্ডের সঙ্গে কথা বলেন এই চলচ্চিত্র নির্মাতা।
কালচারাল ইয়ার্ড: এই গৃহবন্দি সময়ে আপনার পরিবর্তীত জীবনাচরণ ও জীবনবোধ সম্পর্কে জানতে চাই। রফিক সিকদার: এই গৃহবন্দি পরিস্থিতি মহাজগৎ, মানুষ ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে শিখিয়েছে আমাকে। মূলত এ ধরণের পরিস্থিতির মাধ্যমে মহাজগতের মহানকর্তা তাঁর অস্তিত্বকে চূড়ান্তভাবে জানানোর চেষ্টা করছেন বলে মনে করি। এমতাবস্থায় বাঁচো এবং বাঁচাও নীতিকে বুকে ধারণ করে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। এমন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জীবনবোধ সম্পর্কে যে শিক্ষা পেয়েছি তা হলো- অতি মাত্রার আত্মপ্রবণতা ত্যাগ করে প্রত্যেকেরই প্রকৃতি, মানুষ ও মানবিকতার প্রতি আরও বেশি যত্নশীল হতে হবে। সৃষ্টিকর্তা হয় তো এটাই চাচ্ছেন আমাদের তরফ থেকে।
কালচারাল ইয়ার্ড: করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। এই সময়ে চলচ্চিত্র কি ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন? রফিক সিকদার: এই সময়ে শুটিং না করে ঘরে থাকার নীতিতে অটল থাকার কোনো বিকল্প নেই। আপাতত শুটিং নয়। ঘরে থেকে করোনা পরবর্তী কাজের স্ক্রিপ্ট রচনা বা শুটিং পরিকল্পনা করা যেতে পারে। যেহেতু শুটিং এবং সিনেমা প্রদর্শন সম্ভব নয়, সেহেতু করোনা প্রতিরোধ সম্পর্কে বা এর ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহিত করণের বিষয়টি আপাতত চিন্তা করার সুযোগ নেই। সুযোগ থাকলে অনেক ভূমিকা রাখা যেতো।
কালচারাল ইয়ার্ড: এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দি হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় কি মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন কিনা। রফিক সিকদার: অবশ্যই। শিল্পচর্চা মানুষকে মানবিক করে তুলতে বাধ্য।
কালচারাল ইয়ার্ড: করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন। রফিক সিকদার: কাজের চ্যালেঞ্জ বেড়ে যাবে।
কালচারাল ইয়ার্ড: অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে? রফিক সিকদার: অতীত ও বর্তমানে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনাই মনে পড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি মনে পরে আমার মাকে। আজ থেকে দেড় বছর আগে ডাক্তার হাবিবুর রহমান দুলাল’র নির্মমতায় আমি আমার মাকে হারিয়েছি। মায়ের পবিত্র স্মৃতি আমাকে প্রতিদিনই কাঁদায়।
কালচারাল ইয়ার্ড: আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। রফিক সিকদার: আপনাকে ও কালচারাল ইয়ার্ডকেও ধন্যবাদ।