‘করোনা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিল্পীরা’
প্রকাশের সময় :
কণ্ঠশিল্পী সুমি মির্জা। প্রায় এক যুগ ধরে সঙ্গীত চর্চা করছেন। অন্যান্য গান গাইলেও ফোক গান গাইতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। ‘বিনোদিনী রাই’, ‘কাদিবে পরান’সহ তার বেশ কিছু জনপ্রিয় গান রয়েছে। বাংলার পাশাপাশি ঝুমুর গান করে ওপার বাংলায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। সাধারণত কনসার্ট, টেলিভিশন লাইভ ও মৌলিক গান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন তিনি। কিন্তু অপ্রত্যাশিত করোনার কারণে পুরো পৃথিবীর মত তার জীবনেও এসেছে বিরাট পরিবর্তন। পরিবর্তীত এই জীবন ও এই সময়ের নানা বিষয় নিয়ে কালচারাল ইয়ার্ডের সাথে কথা বলেন এই সঙ্গীতশিল্পী।
কালচারাল ইয়ার্ড: কীভাকে কাটছে গৃহবন্দি সময়? জীবনবোধে কোন পরিবর্তন এসেছে কী? সুমি মির্জা: গৃহবন্দি সময়ে জীবনটাকে উপলব্ধি করছি। মনে হচ্ছে, জীবনে এখনও অনেক কিছু করার বাকি আছে। নিজের সামর্থ অনুযায়ী গরীব দুঃখীদের পাশে থাকার চেস্টা করছি। পাশাপাশি ধর্মীয় কাজ করার চেস্টা করছি।
কালচারাল ইয়ার্ড: করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। এই সময়ে গান কি ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন? সুমি মির্জা: এখনকার এই করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি একটি যুদ্ধক্ষেত্র বলে আমি মনে করি। এই সময়টায় যার যার ধর্ম পালন করা উচিত। সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য চাইতে হবে। নিরাপদ থাকার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া জীবনে যেনো একঘেয়েমি না আসে, তাই গান শুনতে হবে। গান মানুষের মন ভালো রাখতে সাহায্য করে বলে আমার বিশ্বাস।
কালচারাল ইয়ার্ড: এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দি হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় কি মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন কিনা। সুমি মির্জা: অবশ্যই। আমি মনে করি, এই গৃহবন্দি সময়ে সব ব্যস্ততা কাটিয়ে নিজেকে সময় দিতে পারছে মানুষ। এ সময় নিজের মননশীলতার বিকাশ ঘটছে। এর প্রেক্ষিতে আগামী পৃথিবী হবে সাংস্কৃতিক ও মূল্যবোধসমৃদ্ধ মানুষের, এমনটা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করছি। কারণ দুই মাসের লকডাউনে আমার মধ্যে জীবনবোধের ও মূল্যবোধের অন্য একটি দুয়ার খুলেছে বলেই এটা আমি মনে করছি।
কালচারাল ইয়ার্ড: করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন। সুমি মির্জা: সাংস্কৃতিক অবস্থা আগের জায়গায় আসতে বেশ সময় লেগে যাবে। সব ঠিক হলেও জনসভা/জনসমাগম হবে না। সেক্ষেত্রে ওপেন কনসার্ট বন্ধ থাকবে। করোনা পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিল্পীরা।
কালচারাল ইয়ার্ড: অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে? সুমি মির্জা: অবসর সময়ে সঙ্গীতকেই খুব বেশি অনুভব করি। দর্শকদের নিয়ে একসাথে গান গাওয়াটা খুব মিস করি। গান গাওয়ার জন্য প্রাণটা হাহাকার করে।