চিত্রনায়ক ও মডেল কায়েস আরজু। অভিনয়ের শুরুটা করেছিলেন মঞ্চ থেকে। কাজ করেছেন টেলিফিল্ম ও বিজ্ঞাপনচিত্রেও। চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ২০০৭ সালে হাছিবুল ইসলাম মিজান পরিচালিত ‘তুমি আছো হৃদয়ে’ ছবির মাধ্যমে। তার মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা নয়টি। সর্বশেষ মুক্তি পায় তার ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ সিনেমা, এটি ২০১৯ সালের বেশ আলোচিত ছিলো। ইতোমধ্যেই শেষ করেছেন আরও দুইটি সিনেমার কাজ। করোনার কারণে সবার মত তিনিও হয়ে পড়েছেন ঘরবন্দী। এ সময়ে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনের নানা বিষয় নিয়ে কালচারাল ইয়ার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন এই তারকা।
কালচারাল ইয়ার্ড : এই গৃহবন্দী সময়ে আপনার পরিবর্তিত জীবনাচরণ ও জীবনবোধ সম্পর্কে জানতে চাই।
কায়েস আরজু : করোনার সংক্রমন থেকে রক্ষা পেতে হলে ঘরে থাকার উপরই প্রাধান্য দিয়েছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা। ঘরে থাকাটাই এখন সবচেয়ে নিরাপদ। ভিন্ন রকম পরিবেশের সাথে আমরা খাপ খাইয়ে নিয়েছি। শুধু আমরাই না, সারাবিশ্বের সকল মানুষ এই নিয়মটা ফলো করছে। অনেকদিনের অভ্যাস পরিবর্তন করে আমরা এখন কোয়ারেন্টাইনে আছি। এটি এক নতুন অভিজ্ঞতা। তবে আশার কথা হচ্ছে, মানুষের মধ্যে একটা শৃংখলা চলে এসেছে। একটা নিয়মের মধ্যে চলে এসেছি।এ যেন গোছানো এক ভিন্ন জীবন। পরিবর্তিত এই জীবনে শৃংখলার পাশাপাশি পারিবারিক বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই শৃংখলা ও বন্ধন অটুট থাকুক- সেটাই প্রত্যাশা করছি।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। এই সময়ে চলচ্চিত্র বা নাটক কি ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন।
কায়েস আরজু : নাটক বা চলচ্চিত্র হচ্ছে সমাজের দর্পণ। সমাজের চিত্রটা তুলে ধরাই নাটক ও চলচ্চিত্রের মানুষদের কাজ। দেশের যেকোন ক্রান্তিকালে সংস্কৃতির মানুষরা এগিয়ে এসেছে। তথ্যচিত্র ও ক্যাম্পেইনিংয়ের মাধ্যমে জনগনের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে। এভাবেই চলচ্চিত্র বা নাটক দেশ, জাতি ও পৃথিবীর ক্রান্তিলগ্নে ভূমিকা রাখতে পারে।
করোনাকালীন সময়ে তারকাদের ভাবনা
⇒ আগামীতে একটা ইতিবাচক সাংস্কৃতিক বিশ্ব আমরা দেখতে পাবো: নিরব
কালচারাল ইয়ার্ড : এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দি হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় কি মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন কিনা।
কায়েস আরজু : মানুষের মধ্যে যে সৃজনশীলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এটি অবশ্যই ইতিবাচক। বৈশ্বিক এই দুর্যোগ সব ধরনের হানাহানি ও হিংসা বিদ্বেষ দূর করে মানুষকে অনেক মানবিক করে তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ এখন অনেক মানবিক ও সহনশীল মানুষে পরিণত হয়েছে। আর সৃজনশীলতার মধ্য দিয়ে সংস্কৃতির বিকাশ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন।
কায়েস আরজু : যেকোন দুর্যোগের পর শুধু সাংস্কৃতিক সেক্টরের নয়, সব সেক্টরই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অনেক যত্নে গড়া সাজানো বাগান সামান্য ঝড়েই লন্ডভন্ড হয়ে যেতে পারে। নতুন করে সব কিছু আগের জায়গায় আনতে অনেক সময় লাগে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে আমাদেরকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। তবে আমি আশাবাদি যে, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন : সালমান শাহকে দেখে অভিনয়ে এসেছি : কায়েস আরজু
কালচারাল ইয়ার্ড : অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে?
কায়েস আরজু : বর্তমানের অবসর সময়ে শুটিং খুব মিস করছি। লাইট, ক্যামেরা আর অ্যাকশনের পরিচিত সেই শব্দগুলি খুব মিস করছি। গত বছর এই সময়টাতে আমি শুটিং নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। আর এবার অবসর। সেসব স্মৃতিগুলি বারবারই ভেসে উঠে স্মৃতির ফ্রেমে।
কালচারাল ইয়ার্ড: আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কায়েস আরজু : আপনাকে ও কালচারাল ইয়ার্ডকে ধন্যবাদ।