ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক নিরব হোসেন। তাঁর পুরো নাম সাখাওয়াত হোসেন নিরব। র্যাম্প মডেল হিসেবে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু। এরপর টেলিভিশন নাটক ও বিজ্ঞাপনে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ২০০৯ সালে পরিচালক শাহীন-সুমনের ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় তার। ২০১৭ সালে তিনি সমীর খান পরিচালিত ‘শয়তান’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে জায়গা করে নিয়েছেন। অভিনয় করেছেন মালয়েশিয়ান ছবি ‘বাংলাশিয়া ২.০’-এ। মুক্তিপ্রাপ্ত তার সর্বশেষ ছবি ‘হৃদয় জুড়ে’। সম্প্রতি শেষ করেছেন ‘ক্যাসিনো’ সিনেমার কাজ। চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ঐতিহাসিক সিনেমা ‘তিতুমীর’-এ। বর্তমানের করোনাকালীন এ ঘরবন্দী সময়ে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন কালচারাল ইয়ার্ডের সঙ্গে।
কালচারাল ইয়ার্ড : এই গৃহবন্দী সময় কিভাবে কাটছে?
নিরব : এই গৃহবন্দী সময়ে জীবনটা আসলে একরকম একঘেঁয়েমী হয়ে গেছে। এ জীবনে ডায়মেনশন খুব কম। একটা সময় ছিলো যখন বাসা থেকে বের হয়ে কোন এক মিটিংয়ে যেতাম, এটা শেষ করে অন্য কোন কাজে যেতাম, এরপর কোথাও আড্ডা দিতাম। আরেকদিন শুটিং থাকলে শুটিংয়ে যেতাম। এরকম যে সময়গুলো পার করেছি, সেখান থেকে এখন পুরো অন্যরকম একটা জীবন পার করছি। যেখানে প্রতিদিন একই রকম যাচ্ছে।
কালচারাল ইয়ার্ড : করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত। এই সময়ে চলচ্চিত্র কি ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন?
নিরব : এ সময়ে চলচ্চিত্রের কোন ভূমিকা রাখার মতো সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। এখন হলে সোস্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করে সিনেমা দেখার কিছু নেই। তবে আমরা যারা চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছি, তারা মানুষকে সচেতন হতে বলতে পারি। এগুলো আসলে বলা হচ্ছে, সোস্যাল মিডিয়ায়, ফেইসবুকে মানুষকে বলা হচ্ছে- কি কি করতে হবে। যেমন সোস্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে চলাফেরা করতে। আমি এটাই বলবো যে, মানুষ যেন সচেতন হয়ে চলাফেরা করে। এখন বাকিটা মানুষ মেনে চলবে কিনা এটা তাদের ব্যাপার।
চিত্রনায়ক নিরব সম্পর্কিত আরও খবর :
⇒ ‘তিতুমীর’ চলচ্চিত্রে চিত্রনায়ক নিরব
⇒ নিরবের প্রশংসায় শাকিব খান
কালচারাল ইয়ার্ড: এই ব্যস্ততম পৃথিবীর মানুষ গৃহবন্দী হয়ে গেছে। ব্যস্ততা থেকে অখন্ড অবসর। এ সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি মানুষের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাইছে, কেউ আবৃত্তিও করছে। সিনেমাও হচ্ছে। এ সময় কি মানুষের মানবিকতা আর সাংস্কৃতিকবোধের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করেন কিনা?
নিরব : অবশ্যই, অনেক বড় একটা সময় আমরা বাসায় বসে পার করছি। এ সময় অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের। এ সময় অনেক বড় সময় পরিবারের সঙ্গে থেকে একটা ফ্যামিলি বন্ডিং ক্রিয়েট হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বৈশ্বয়িক একটা বন্ডিং তৈরি করা যে, কীভাবে আমরা সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারি। সবাই মিলে ভালো কিছু একটা করতে পারি। এই যে বৈশ্বয়িক বন্ডিং, এ থেকে ভবিষ্যতে পৃথিবীতে ভালো কিছু হতে পারে।
এছাড়াও কেউ ছবি আঁকছে, কেউ গান গাচ্ছে, এটা অবশ্যই পজিটিভ। কারণ এ থেকে যে যার জায়গা থেকে অভিজ্ঞ ও দক্ষ হয়ে উঠছে। মানুষ এ সময়ে অনেক কিছু দেখছে, অনেক কিছু জানছে। অবশ্যই, আমি বলবো তাদের দেখার ও জানার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। যা অত্যন্ত পজিটিভ।
কালচারাল ইয়ার্ড: করোনা পরবর্তী পৃথিবী সাংস্কৃতিক মানুষের জন্য কেমন হবে বলে মনে করেন?
নিরব: এমন একটা সিচুয়েশনে আমরা আছি, সেখান থেকে এটা বলা খুবই কঠিন। কারণ এ সময়টুকু কতদিন বহাল থাকবে, আমরা কেউই জানি না। আর আমরা যারা সিনেমার লোক, আমরা কোন একটা সিনেমা করবো, প্রডিউসার ছবিটা কবে রিলিজ দেবে, মানুষ সোস্যাল ডিসটেন্স মেইনটেইন করে হলেও কবে ছবি দেখতে আসবে, হল কবে খুলবে, এগুলো সব কিছুর উপর ব্যাপারগুলো ডিপেন্ড করছে।
এছাড়া আমরা এ সময়ে আমাদের অনেক ছোট ছোট ভুলগুলো সম্পর্কে জানতে পারছি। আশা করি, এগুলো থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করবো। আমরা পরবর্তী সাংস্কৃতিক বিশ্বের ভালো ভালো কাজে এগুলো ব্যবহার করলে, আগামীতে একটা ইতিবাচক সাংস্কৃতিক বিশ্ব আমরা দেখতে পাবো বলে আমি আশা করি।
করোনাকালীন সময়ে তারকাদের ভাবনা
⇒ এই সময়টা নিজেদেরকে গড়ে তোলার : পায়েল মুখার্জি
কালচারাল ইয়ার্ড: অবসর সময় আপনার অতীত স্মৃতিতে কি কি ভেসে আসে। কোন সময়টা ধরা দেয় স্মৃতিতে?
নিরব: প্রথম যেটা সেটা হচ্ছে, শুটিংয়ের সময়টা সবচেয়ে বেশি মিস করি। শুটিংয়ের আড্ডা, হাস্যরস, মিটিংয়ের আড্ডাবাজি, গ্রিনরুমের আড্ডাবাজি। প্রত্যেকটা দিনের শুটিংয়ের যে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা, যেগুলো এ সময়ে অত্যন্ত মিস করছি এ সময়ে।
কালচারাল ইয়ার্ড: কালচারাল ইয়ার্ডকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
নিরব: আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।