নিজস্ব প্রতিবেদক :
একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা ও অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদের প্রয়ান দিবস আজ। ২০১৯ সালের ২ জুন তিনি পরপারে পাড়ি জমান। ছিলেন ভাষাসৈনিক, ছিলেন স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত। নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।
১৯৯৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। নাট্যকলায় অবদানের জন্য ২০০৮ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। কালচারাল ইয়ার্ড পরিবারের পক্ষ থেকে এ গুণী নাট্যকার ও অভিনেতার প্রতি শ্রদ্ধা।
মমতাজউদদীন আহমদ ১৯৩৫ সালের ১৮ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মস্থান ছিলো ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত মালদহ জেলার হাবিবপুর থানার আইহো গ্রামে। দেশ বিভাগের পর পরিবারসহ তদানিন্তন পূর্ববঙ্গে চলে আসেন তিনি। তার পিতা কলিমুদ্দিন আহমদ ও মাতা সখিনা বেগম। ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ভাষা আন্দোলন ও দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রণী।
তিনি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কলেজে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ইউরোপীয় নাট্যকলায় শিক্ষকতা করেছেন। এছাড়াও তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের খন্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭৬-৭৮ সালে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নের বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৭-৮০ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ২০১১ সাল থেকে জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
‘বাংলাদেশের নাটকের ইতিবৃত্ত’, ‘বাংলাদেশের থিয়েটারের ইতিবৃত্ত’, ‘প্রসঙ্গ বাংলাদেশ’ ও ‘প্রসঙ্গ বঙ্গবন্ধু’ প্রবন্ধ ও চার্লি চ্যাপেলিন-ভাঁড় নয় ভব ঘুরে নয়, লাল সালু ও সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ, মহানামা কাব্যের গদ্যরূপ, সাহসী অথচ সাহস্য, নেকাবী এবং অন্যগণ, জন্তুর ভিতর মানুষসহ অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি।
নাট্যত্রয়ী, কি চাহ শঙ্খ চিল, রাজা অনুস্বরের পালা, বকুল পুরের স্বাধীনতা, রাক্ষসীসহ অসংখ্য নাটক রচনা ও অভিনয় করেছেন তিনি।
এছাড়া তিনি চিত্রা নদীর পাড়ে, হাছন রাজাসহ বেশি কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।