নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের খ্যাতিমান সঙ্গীতজ্ঞ, প্লেব্যাক সম্রাট ও সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হন গেল বছর। এ জন্য তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তিও হন। কিছুদিন আগে দেশে ফিরে নিজ জন্মভূমি রাজশাহীতে অবস্থান করছিলেন তিনি। রোববার এ সঙ্গীতশিল্পীর শারিরীক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তাঁর অসুস্থতার খবরে সারাদেশে ভক্তরা প্রার্থনা করছেন।
এন্ড্রু কিশোর অসুস্থ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে যান। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর জান যায় মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে এন্ড্রু কিশোরের চিকিৎসা শুরু হয়।
এদিকে বাবার অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় থাকা এক ছেলে ও এক মেয়ে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। টিকিট পাওয়ামাত্র তাঁরা দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
এন্ড্রু কিশোরের মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা সিডনিতে গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ে পড়েন। তাঁর ছেলে জে এন্ড্রু সপ্তক মেলবোর্নে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়াশোনা করছেন।
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। তিনি দেশ-বিদেশের অনেক চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এ জন্য তাঁকে চলচ্চিত্রের ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ বলা হয়।
রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে তাঁর সঙ্গীতের হাতেখড়ি। তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীত থেকে শুরু করে আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গান গেয়েছেন। ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শুরু করেন।
এন্ড্রু কিশোর অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়ে দর্শকনন্দিত হয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে, জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যে খানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান, ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা ইত্যাদি।
তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
এদিকে এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর শুনে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা তাঁর আরোগ্য কামনা করেছেন। প্রার্থনা করেছেন তিনি যেন সুস্থ হয়ে সবার কাছে ফিরে আসেন। ছড়িয়ে পড়া কিছু গুজবেরও বিরোধীতা করেন অনেকে।