এন্ড্রু কিশোর, যিনি বাংলাদেশের ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামেই খ্যাত। সহস্র গানে কণ্ঠ দেওয়া এই কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী গত ৬ জুলাই মাত্র ৬৪ বছর বয়সে দীর্ঘদিন অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আর বাংলাদেশ হারলো এক রত্ন। কিংবদন্তি এই শিল্পীর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন জনপ্রিয় ও শ্রোতাপ্রিয় আরেক কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। এই জুটির প্রায় সবক’টি গানই শ্রোতারা গ্রহণ করেছেন। চলচ্চিত্র, আধুনিক গান, নজরুল সঙ্গীত, লোকগীতিসহ প্রায় সব ধরনের গানেই সমানভাবে পারদর্শী কনকচাঁপা। তিনি দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে সঙ্গীতাঙ্গনে সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি চলচ্চিত্রের তিন হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। প্রকাশিত হয়েছে ৩৫টি একক গানের অ্যালবাম। তাঁর গান মানেই তুমুল শ্রোতাপ্রিয়। প্রিয় শিল্পীর শোকে মুহ্যমান কনকচাঁপা তাঁর ফেসবুকে লিখছেন প্রয়াত এন্ড্রু কিশোর এর সাথে তাঁর বেশ কিছু স্মৃতিকথা। কালচারাল ইয়ার্ড’র পাঠকের জন্য পর্ব আকারে তা তুলে ধরা হলো। সম্পাদনা করেছেন ফাহিম ফয়সাল।
আবহমান বাংলার পলিমাটির কোমল মায়াবী আবহাওয়া এবং প্রকৃতিতে আলহামদুলিল্লাহ অনেক কণ্ঠই ভেসে ভেসে আসে। আকাশ বাতাস কাঁদিয়ে সেসব কণ্ঠ স্বরের সুরসুধা বাংলাদেশকে আমোদিত, বিমোহিত, আনন্দিত, আবেগাপ্লুত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত; কিন্তু বাংলাদেশের বিশাল এবং প্রধানতম বিনোদনের জায়গা সিনেমা হল। সেখানে যারা ছবি তৈরি করেন, ছবির জন্য ভালোবেসে টাকা ঢালেন, চিত্রকল্প লেখেন, অভিনয় করেন, গান করেন, হাসেন-কাঁদেন, তারা এবং তাদের জীবন, তাদের উপস্থাপন, তাদের শক্তি- সবকিছুই ‘লার্জার দেন লাইফ’ হয়ে থাকে এবং হতে হয়।
সেই পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র ৩৫ মিলিমিটারের জন্য ফুলস্কেপে পুরো স্ক্রিনে গান ভাসিয়ে দেওয়া ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ নামক শক্তির চেয়েও বেশি শক্তির অধিকারী হতে হয়। ব্যাপারটা বোঝার জন্য একটু কঠিন হয়ে গেলো কি? আমি দুঃখিত এর চেয়ে সহজ করে আমি বোঝাতে পারছি না।
আমাদের দেশে কণ্ঠশিল্পী আছেন কতজন আর ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা’র (বিএফডিসি) এ যাবৎকালের ইতিহাসগুলোর প্লেব্যাক সিংগার আছেন ক’জন? এর উত্তর কারো জানা আছে? এই প্রশ্ন কারো মাথায় এসেছে? মঞ্চ মাতানো আর প্লেব্যাক যোজন যোজন দূর।
প্লেব্যাক সিংগার আছেন হাতেগোনা ক’জন; কারণ অন্যান্য গান গাওয়া যায়, কিন্তু পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র ৩৫ মিলিমিটারের জন্য গান গাওয়া খুব কঠিন।
হলে স্ক্রিন ভরে পুরো গান ছড়িয়ে গেলে সে গান হলের ভেতর সর্বজনীন হয়ে ওঠে। গানের ওয়েভ মাপারও যন্ত্র আছে। আছে কোয়ার্টারথ্রোট, হাফথ্রোট, ফুল থ্রোটের গ্রামার। ফিল্মে একমাত্র যাদের ফুলথ্রোটওয়ালা কন্ঠ আছে তাদের কন্ঠই কাজে লাগে। কিন্তু সেই কণ্ঠকে পানির মতো বইয়ে দিতে হয়। সেটা বড় কঠিন কাজ আর এই কঠিন কাজ পানির মতো সহজ করে সফলতার সঙ্গে উপস্থাপন করে নিজেকে বাঘের মতো শক্তিশালী হিসেবে যিনি পরিচিত করতে পেরেছেন, তিনি আমাদের কণ্ঠরাজ এন্ড্রু কিশোর।
আমি তাঁর কণ্ঠকে বলি গলিত সোনা। সোনার চলমানধারা। তাঁর সঙ্গে পরিচয়ের আগেই আমি তাঁর গান শুনি। ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে এএএএ। হেসে-খেলে, তাচ্ছিল্যভরে কেউ দুঃখ কইতে পারে- এ কথা আমি আগে জানতামই না। দয়াল ডাকছে, আমি মরে যাবো- এ গানতো বাংলাদেশিরা ফিচফিচ করে কেঁদে কেঁদে গায়! এতো দুঃখের অনুভূতি এমন হেসে-খেলে আসল ভাব বজায় রেখে গাইলেন আমাদের কিশোর দা। সেই থেকে শুরু। আমি আব্দুল আলীম থেকে একেবারে কিশোর দা’তে স্থানান্তরিত হলাম। সে হয়তো ’৮০/’৮১-এর কথা।
এরপর ’৮৬ সালে জীবনসঙ্গী সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খান সাহেবের ছবি “নাফরমান” এর গানের রেকর্ডের দিন ওনাকে আমি সামনা সামনি দেখলাম; কিন্তু মনে হলো কত দিনের চেনা। হাতে একটা অফিসিয়াল ব্যাগ। সেখান থেকে কাগজ-কলম বের করে গান লিখে নিলেন! গান তোলার সময় কলমের হেড ঠোঁটের সঙ্গে ক্লিপ করার মতো একটা ভঙ্গি করে গান তুলে নিলেন একমুহূর্তেই। এটাই দেখে এসেছি আজীবন।
এরপর ইতিহাস! প্রতিটি গানই তাঁর ইতিহাস। অথচ তিনি বলতেন আমিতো আমজনতার শিল্পী। ভদ্রলোকরা আমার গান শোনেন? প্রথম আলো মেরিল পুরস্কার প্রথমবার পাওয়ার পর বারবার বলছিলেন কি আশ্চর্য, আমার গান ভদ্রলোকের বেড রুমে যায়! অথচ সারা বাংলা, সারা পৃথিবী গানের জন্য প্রদক্ষিণ করার সময় একবার নিউইয়র্কে ডাক্তারদের জন্য গান গেয়ে ইন্টারভেলে ব্যাক স্টেইজে একদল ডাক্তার এসে যখন বললেন কিশোর দা, আপনার গান শুনে শুনে আমরা ডাক্তার হয়েছি। কিশোর দা সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে চোখ সরু করে শুধান “সে কেমন?” তাঁদের উত্তর ছিলো যখন মানব দেহের হাড্ডি গুড্ডি আমাদের আঁকড়ে ধরতো, মাথা কাজ করতো না তখন “এন্ড্রু কিশোর” ছেড়ে মাথা ঠান্ডা করতাম। তারপর সেটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেলো। কিশোর দা’র হাতের সিগারেট পুড়ে ছাই। আমি বললাম “এবার বুঝলেন তো!” তিনি শিশুর সরলতায় ফ্যাঁক ফ্যাঁক হাসেন। বাঘের মুখে শিশুর হাসি বড়ই সুন্দর!
কত গান যে গাইলাম তার সঙ্গে! পৃথিবীর সবকিছুই যেন তাঁর নখদর্পণে; কিন্তু কোনো কিছুতেই তাঁর কিছু আসে যায় না। জীবনে কোনো সমস্যাই তাঁর কাছে সমস্যা নয়, এক মুহূর্তেই সমাধানও দিয়ে দেবেন চোখ বুঁজে!
খেতে এতো ভালোবাসতেন কিশোর দা! একাই তিনজনের খাবার সাবাড় করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই আবারও খিদা লাগাতে পারতেন! বলতেন জানো কনক আমার হলো ইচ্ছে খিদে। ইচ্ছে হলেই খেতে পারি। খুব আমুদে মানুষ তিনি কিন্তু ভীষণ প্রফেশনাল কিশোর দা। মিরপুর থেকে প্রায় রোজ শ্রুতি স্টুডিওতে সময়মতো পৌঁছে যাওয়া চাট্টিখানি কথা না!
আমার প্রতি তাঁর অপত্য স্নেহ ছিলো এ আমি দাবি করতেই পারি। আমার প্রথম বই ‘স্থবির যাযাবর’ এর মোড়ক উন্মোচন। কিশোর দা’র জন্য বইমেলার মতো জনসমক্ষে যাওয়া সত্যিই কঠিন। উনি ঠিকঠাক উপস্থিত হলেন। আমি সৌভাগ্যবশত যে সে মেলায় আমার চার ভাই এন্ড্রু কিশোর, তপন চৌধুরী, শুভ্রদেব ও মনির খানকে সেখানে পেয়েছিলাম পাশে। মেলায় জটলা লেগে গেলো। কিসের বই কিসের কি! কিশোর দা’কে দেখতেই সব হুমড়ি খেয়ে পড়লো। পরে পুলিশ টুলিশ করে নিস্তার। এই ভয় থাকা সত্বেও আবারও আমার চিত্রপ্রদর্শনীতে ঠিকঠাক গিয়ে উপস্থিত। তখন সেলফির যুগ। এইটা কিশোর দা একদম সহ্য করতে পারতেন না! আমার ছেলেমেয়ের বিয়েতেও উনি সময়মত এসেছেন। এছাড়াও পারিবারিক দাওয়াতে অংশগ্রহণ করেছেন খুব আগ্রহ নিয়ে।
এই শক্তিশালী মানুষটিকে আমি কাঁদতেও দেখেছি জনসমক্ষে। রাজশাহীতে তার ওস্তাদজির অসুস্থতায় আমরা কজন যখন বিনা পারিশ্রমিকে গাইতে গেছি, তখন তিনি মঞ্চে কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন! সে কান্না মঞ্চের পেছনেও শেষ হয়না। নীরবে নীরবে অনেক দান-ধ্যান করেন কিশোর দা; কিন্তু কাউকে টের পেতে দেন না! আমাদের মিলু ভাই চলে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন আসিফ এবং কিশোর দা মিলে মিলু ভাইয়ের পরিবারের পাশে নিরবে দাঁড়িয়েছিলেন যা আমাদের জানতে দেন নাই।
নিজের রাজশাহীর মানুষের প্রতি অসম্ভব পক্ষপাত ছিলো, তাদের সুখ দুঃখ আর্থিক অভাব অনটন সব জানতেন খোঁজ নিতেন এবং যথাযথ ব্যাবস্থা করতেন নিরবে।
আমাকে কিশোরদা অসম্ভব স্নেহ করতেন, যার কোনো তুলনা হয়না। আমার রান্না তাঁর খুব পছন্দ আর খেতে তিনি খুব ভালোবাসেন আগেই বলেছি। আমার স্বামী তার বয়সে কিছু ছোট; কিন্তু এমন স্নেহভরা কণ্ঠে তিনি ‘ও মইনুল’ বলে ডাক দেন যে, আমার বুকটা ভরে ওঠে অসম্ভব ভালো লাগায়। সুরকার মইনুল ইসলাম খান সাহেব সাউন্ড টেকের একটি ক্যাসেট করেছিলেন “দুখের সানাই”। তখন কিশোর দা ক্যাসেটের একটা গানে লাখের উপর পেমেন্ট নেন। তো গাওয়ার আগে বললেন মইনুল তোমার গান যে কঠিন, আমি পারবো? এমন উদ্ভট কথা বলে তিনি কিনা অপূর্ব গেয়ে দিলেন। সম্মানীর কথায় বললেন “মইনুল, সাউন্ড টেকের কাজ না কিসের কাজ আমি জানিনা, আমি তোমার গান গেয়েছি। আমাকে দিয়ে কেউ তেমন অন্য ধারায় এক্সপেরিমেন্ট করেনি। তুমি করলে এতেই আমি খুশি। আমিও নিজেকে ঝালিয়ে দেখলাম যে আমি পারি কিনা! আমি কোন পয়সা নেবো না। এই নিয়ে দুজনের ধস্তাধস্তি পর্যন্ত হলো, খান সাহেব সেই সম্মানী নেওয়াতেই পারলেন না!
কিশোর দার সঙ্গে ছবিতে যেমন হাজার হাজার গান গেয়েছি তেমন শতশত মঞ্চেও গেয়েছি এক সঙ্গে। খুবই মজার বিষয়- কিশোর দা ভাবেন উনি মঞ্চের শিল্পী নন। একটু অস্বস্তিও তাঁর টের পেয়েছি; কিন্তু ঘটনা হলো- তাঁর সুন্দর মার্জিত ড্রেস আপে তিনি যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে ‘আমার সারাদেহ খেওগো মাটি ওওওওওও’ বলে টান দিতেন, তখন মনে হতো লম্বা একটা লোক অসম্ভব জাদুশক্তি-বলে এক টানে লম্বা একটা তালগাছ কেটে নেমট করে গোড়া উপড়ে ধরায় নামিয়ে আনলেন! এটা লিখতে গিয়েও আমার গায়ের রোম দাঁড়িয়ে গেল।
আমি প্রতিটি মঞ্চের পেছনে হা করে বসে তাঁর গান শুনতাম। মঞ্চের হাজার পাওয়ারের আলো ম্লান হয়ে যেতো তাঁর উপস্থিতির কাছে। “ওরে এই না ভুবন ছাড়তে হবে দুদিন আগে পরে” গাইতেন যখন তখন আমি অঝোরে কাঁদতাম। এটা আমার রেগুলার রুটিন ছিলো! এছাড়া আমি পারতামই না!
আমি আর কিশোর দা যখন একই বুথে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে প্লেব্যাক করতাম, তখন আমাদের ভীষণ হেলদি একটা প্রতিযোগিতা চলত- কে কতটা ভালো গাইতে পারি। ফার্স্ট হওয়ার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও একজন আরেকজনকে খাতা দেখানোর মতো কান্ড করতাম। আমি হয়তো জিজ্ঞেস করলাম- কিশোর দা এই জায়গাটা কেমনে কী? উনি হেসে দিয়ে বলতেন- তুমিই দেখাও। যেন আমি তার খাতা দেখে নিচ্ছি। অনেক সময় দেখা গেল গলা বসা। ঢকঢক গরম পানি চলছে, আমি তাঁর জন্য চিন্তা করছি; কিন্তু গাইতে গিয়ে সেই গলিত সোনার প্রবাহ। আহা! আমি আর লিখতে পারছি না।
গত সেপ্টেম্বর এগারো তারিখ। আমার পঞ্চাশতম জন্মদিন! অথচ আমি পরিবার ছেড়ে নিউইয়র্কে ভাগ্নীর বাসায়। জাহাঙ্গীর ভাই জানালেন দাদা অসুস্থ। সিংগাপুর চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টাকা নিয়ে নিন্দুকেরা ঝড় তুলেছে। আমি ভাই বারে কিশোর দার শারীরিক অবস্থা জেনে তারপর বললাম কিশোরদা এই অবস্থা, আমি প্রতিবাদ করতে চাই, কি বলেন। উনি বরাবরের মতো ঠান্ডা মাথায় বললেন শোন, আমি তো আর অভদ্র বেয়াদব না! মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডেকেছেন, আমাকে তো যেতেই হবে। আগ বাড়িয়ে কিছু বলার দরকার নেই। কেউ বেশি আজেবাজে কথা বললে তখন তুমিতো মার মতো করে উত্তর দিও। নয় মাস চিকিৎসা করার পরে যখন বিফল মনোরথ হয়ে ফেরত আসছেন সেইসময়ও তাঁর সাথে কথা হলো। বৌদি ফোন ধরিয়ে দিলেন। তখন দাদার কেঁপে কেঁপে জ্বর। ফোনে খালি বললেন কনক, বাঁচি মরি, যাই হোক খালি দোয়া কইরো যেন কষ্ট বেশি না পাই! আমাদের কথা আর আগায়নি। আমার এতো কথা মনে থাকে অথচ একদমই মনে পড়ছেনা শেষ কবে ওনার সাথে দেখা হয়েছিল, এই ছোট দুঃখটি কিনা ওনাকে হারানোর চেয়ে বড় হয়ে এমনভাবে ফেনিয়ে উঠলো যে গতকাল রাতে একফোঁটাও ঘুম এলোনা। হায়রে মানুষের মন।
কিশোর দা খুব রংচঙয়ে কাপড় পরতেন, পরতেন আধুনিক ডিজাইনের নিত্যনতুন পাঞ্জাবী। কিন্তু আমার ধারণা সাদা পাঞ্জাবীতে ওনাকে দারুণ লাগতো। ঘাড়ের হাঁড়ের সমস্যায় উনি ঝুঁকে হাঁটতেন বলে তাকাতে গিয়ে সবসময়ই চোখ উঁচু করতে হতো। মনে হতো ঘুমে ঢুলুঢুলু। ফেসবুকে একজন মহিলা এ নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় আমার সাথে ঝগড়াই লেগে গেলো। তখনও শুনে বলেছিলেন থাক, বলুক। লোকের কথায় কি আসে যায়!
জীবনে কখনো কিশোর দাকে মানুষের বদনাম গসিপিং করতে শুনিনি। কেউ বললে বলতেন আরে বাদ দাও, কে কি করলো তাতে কি আসে যায়! এমন স্মৃতি লেখার কতো কিছু আমার ভান্ডারে আছে কিন্তু আর পারছি না। এই স্মৃতিকাতরতা থেকে বেরুতে হবে নাইলে আমি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি!
আমাদের একজনই কিশোর দা, আমরা তার সুস্থতার আশায় পথ চেয়ে বসেছিলাম চাতকের মতো। কিন্তু আমাদের ছেড়ে তিনি চলে গেলেন। আমি খুব চাইতাম তাকে আর আলাউদ্দিন আলী ভাইকে রান্না করে খাওয়াব! হলো না। কিন্তু ইচ্ছে এভাবে বাকি রয়ে যায়।
কনকচাঁপা, কন্ঠশ্রমিক (০৭/০৭/ ২০২০)।