নিজস্ব প্রতিবেদক:
নীল আকাশের নিচে ঘুরে বেড়ানো প্রেমিক পুরুষ, প্রেমিক রংবাজ, জীবন থেকে নেওয়ার প্রতিবাদী যুবক ও বাবা হয়ে সন্তানের চাকর হওয়াসহ বহু চরিত্র ধারণ করা শিল্পী নায়করাজ রাজ্জাক। আজ তাঁর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট পরলোকে পাড়ি জমান তিনি। কালচারাল ইয়ার্ড পরিবার নায়ক রাজের মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছে।
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। তিনি চার দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাংলা সিনেমায় রাজত্ব করেছেন। তিনি ঢালিউডের পাশাপাশি ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন টলিউডেও। অভিনয়ে জয় করে নিয়েছেন দুই বাংলার মানুষের মন। পরিচালনায়ও তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত।
আব্দুর রাজ্জাক ১৯৪২ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন। স্বপ্ন ছিলো নায়ক হবেন।
তিনি ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাই থেকে সিনেমার ওপর ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। ১৯৬৪ সালের সেখানে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় স্ত্রী লক্ষী ও পুত্র বাপ্পারাজকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন।
‘উজালা’ সিনেমার পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারি হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন তিনি। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ১৯৬৬ সালে। ‘ফেকু ওস্তাগার লেন’ নামক একটি চলচ্চিত্রে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
নায়ক হিসেবে তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘বেহুলা’। এটি ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় । কিংবদন্তি পরিচালক জহির রায়হান ছবিটি নির্মাণ করেন। এরপরে তাঁকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ষাটের দশকের শেষ থেকে সত্তর ও আশির দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করেন তিনি। তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
তাঁর জননন্দিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে নীল আকাশের নীচে, ময়নামতি, মধু মিলন, পীচ ঢালা পথ, যে আগুনে পুড়ি, জীবন থেকে নেয়া, কী যে করি, অবুঝ মন, রংবাজ, বেঈমান, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, অনন্ত প্রেম, বাদী থেকে বেগম প্রভৃতি।
তিনি বেশ কিছু সিনেমা পরিচালনাও করেছেন। সেখানেও তিনি পেয়েছেন সফলতা। তাঁর পরিচালিত ছবির মধ্যে রয়েছে অনন্ত প্রেম, বদনাম, কোটি টাকার ফকির, অভিযান, জ্বীনের বাদশা, সৎ ভাই, প্রফেসর, আমি বাঁচতে চাই, উত্তর ফাল্গুনী, বাবা কেন চাকর, মরণ নিয়ে খেলা, মন দিয়েছি তোমাকে, আয়না কাহিনী ইত্যাদি।
রাজ্জাক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দুইবার বাচসাস পুরস্কার, মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরসাকারে ভূষিত হয়েছেন।