স্বপ্ন দেখতেন চলচ্চিত্র নির্মাতা হওয়ার। ছোট পর্দার ফিকশন বানিয়ে পেয়েছিলেন খ্যাতি। বড় পর্দা ও ছোট পর্দার খ্যাতিমান অভিনেতাও ছিলেন। আগাগোড়া স্বপ্নবাজ মানুষ ছিলেন ‘ঊন মানুষ’-খ্যাত হুমায়ূন সাধু। ছিলেন একাধারে অভিনেতা, নির্মাতা ও গল্পকার। বিনোদন অঙ্গনের সবার প্রিয় এই মানুষটি চলে যাওয়ার দিন আজ। কালচারাল ইয়ার্ড পরিবার এই গুনী মানুষটির চলে যাওয়ার দিনে তাঁকে স্মরণ করছে।
১৯৮২ সালের ১ মে চট্টগ্রামে জন্ম ঊন মানুষ টেলিফিল্মের এ অভিনেতার। ৯ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সপ্তম। দৈহিক গঠনে ছোট হওয়ায় তিনি স্কুলে যেতে পারেননি প্রথমে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে ভর্তি করাতে চায়নি। হুমায়ূনের বড় ভাই সাইফুল কবীর তাকে স্কুলে ভর্তি করাতে শিক্ষকদের অনুরোধ করেন। পরে দেখা যায় হুমায়ুন ২য় শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে ১৩০ জন ছেলে-মেয়েকে পেছনে ফেলে প্রথম হন।
ছোটবেলায় মা মরিয়ম বেগমের সঙ্গে হিন্দি, ইংরেজি এবং বাংলা সিনেমা দেখতেন তিনি। সে সময় তিনি দেখেছেন লাইফ ইজ বিউটিফুল, চিলড্রেন অফ হ্যাভেন, সিটি অফ গড ও ফেলুদার মতো চলচ্চিত্র। সেই থেকে নির্মাণ ও অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মে তাঁর।
জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সহকারি হিসেবে মিডিয়াতে কাজ শুরু করেন হুমায়ূন কবীর সাধু। তিনি এ সময় চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের সঙ্গেও কাজ করেন। এরপর নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তিনি ফারুকী পরিচালিত ‘ঊন মানুষ’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। নিজের নির্মিত ও অভিনীত ‘চিকন পিনের চার্জার’ নাটকেও দুর্দান্ত অভিনয় করে সাধু।
ফারুকীর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সিনেমায় অভিনয় করে চলচ্চিত্রজীবন শুরু করেন। রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ সিনেমাও তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন নামকরা নির্মাতার বহু নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। সাধু বেশকিছু নাটকও নির্মাণ করেছেন। চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণাও দিয়েছিলেন এই গুনী মানুষটি।
সর্বশেষ একুশে বই মেলায় তার লেখা প্রথম গল্পের বই ‘ননাই’ প্রকাশিত হয়েছিলো। এছাড়া হুমায়ূন সাধুর প্রযোজনায় ‘আমার ঘরে বিরাজ করে লালনগীতি’ নামে একটি সঙ্গীত অ্যালবাম বের হয়। যা অ্যামাজনে প্রকাশ পায়।