নিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত গণসঙ্গীত শিল্পী ড. ভূপেন হাজারিকার প্রয়াণ দিবস। ২০১১ সালের ৫ নভেম্বর তিনি প্রয়াত হন। কোমল ভঙ্গি ও কণ্ঠে জাদুকরী মুগ্ধতা ছড়াতেন তিনি। তাঁর কাব্যময় গায়কী কালান্তরে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিয়েছে। এই জাদুকরী শিল্পীর প্রয়াণ দিবসে কালচারাল ইয়ার্ডের শ্রদ্ধা।
প্রণয় থেকে শুরু করে সামাজিক বা রাজনৈতিক সকল বিষয় উঠে এসেছে ভূপেন হাজারিকার কণ্ঠে। থেকে তুলে আনতেন। আধুনিক থেকে লোকসঙ্গীত সবধরণের গান গাইতেন তিনি। তিনি নিজে সুর করতেন ও গাইতেন।
১০ বছর বয়সে গানের হাতিখড়ি। ওই সময় থেকে তিনি গানও লিখতে আরম্ভ করেন। শিশুশিল্পী হিসেবে আসামের চলচ্চিত্রেও কাজ করেন তিনি। ভূপেন হাজারিকা বাংলা, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষায় অসংখ্য গান গেয়েছেন।
আসামের চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে ১৯৩৯ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি গেয়েছেন। অসমীয়া ভাষায় নির্মিত জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা পরিচালিত ইন্দুমালতী চলচ্চিত্রে ‘বিশ্ববিজয় নওজোয়ান’ শিরোনামে তিনি শিশু বয়সে গান গেয়েছেন। তিনি আসাম ও হিন্দি ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।
১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ভারতের আসামে জন্মগ্রহণ করেন ভূপেন হাজারিকা। তাঁর পিতা নীলকান্ত হাজারিকা, মায়ের নাম শান্তিপ্রিয়া হাজারিকা। দশ ভাই বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তিনি। অমর হাজারিকা, প্রবীণ হাজারিকা, সুদক্ষিণা শর্ম্মা, নৃপেন হাজারিকা, বলেন হাজারিকা, কবিতা বড়ুয়া, স্তুতি প্যাটেল, জয়ন্ত হাজারিকা ও সমর হাজারিকা তাঁর ভাই বোন।
১৯৪২ সালে গুয়াহাটির কটন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট আর্টস পাশ করেন। ১৯৪৪ সালে কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ. ও ১৯৪৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ. পাস করে তিনি ১৯৫২ সালে নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রি অর্জন করেন।
ভূপেন হাজারিকার বাংলা গানের মধ্যে রয়েছে-আজ জীবন খুঁজে পাবি, আমি এক যাযাবর, আমায় ভুল বুঝিস না, একটি রঙ্গীন চাদর, ও মালিক সারা জীবন, গঙ্গা আমার মা, প্রতিধ্বনি শুনি, বিস্তীর্ণ দুপারে, মানুষ মানুষের জন্যে, সাগর সঙ্গমে, হে দোলা হে দোলা, চোখ ছলছল করে প্রভৃতি।
বাংলাদেশের ‘সীমানা পেরিয়ে’ সিনেমায় সঙ্গীত পরিচালনা করেন ভূপেন হাজারিকা। সেই সিনেমার বিখ্যাত গান ‘মেঘ থম থম করে’ বিপুল জনপ্রিয় এখনও। একাত্তরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর কালজয়ী গানগুলো চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।