নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলচ্চিত্র নির্মাতা ও জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সম্পাদক সাইদুল আনাম টুটুলের প্রয়াণ দিবস আজ। ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আজকের এই দিনে কালচারাল ইয়ার্ড পরিবার তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বরণ করছে।
সাইদুল আনাম টুটুল মৃত্যুর পূর্বে সরকারি অনুদানে ‘কালবেলা’ সিনেমাটি নির্মাণ করছিলেন। ২০০১ সালে আইন ও সালিশ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ‘নারীর ৭১ ও যুদ্ধপরবর্তী কথ্যকাহিনী’ অবলম্বনে ‘কালবেলা’ ছবিটি নির্মিত হয়। টুটুল প্রয়াত হওয়ার দুই বছর পর গত ১০ ডিসেম্বর মুক্তি পায় তাঁর স্বপ্নের নির্মাণ সিনেমাটি।
‘কালবেলা’ চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা ও অসমাপ্ত কাজ শেষ করেছেন টুটুলের সহধর্মীনী মোবাশ্বেরা খানম। এতে প্রধান দু’টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তাহমিনা অথৈ এবং শিশির আহমেদ। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন মাসুম বাশার, মিলি বাশার, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, লুৎফর রহমান জর্জ, শেখ মাহবুবুর রহমান, সায়কা আহমেদ, জুলফিকার চঞ্চল, কোহিনুর আলম, তানভীর মাসুদসহ অনেকে।
আশির দশকে যারা বাংলাদেশ থেকে বৃত্তি নিয়ে ভারতের পুনের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে পড়তে গেছেন, তাদের মধ্যে চলচ্চিত্রকার সাইদুল আনাম টুটুল অন্যতম। তিনি চলচ্চিত্র সম্পাদনায় পড়াশুনা করে দেশে ফিরে এসে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে কাজ শুরু করেন।
তিনি সম্পাদনা করেন সূর্য দীঘল বাড়ী, ঘুড্ডি, দহন, দীপু নাম্বার টু’র মতো কালজয়ী সিনেমা। তিনি সরকারি অনুদানে নির্মাণ করেন ‘আধিয়ার’।
সাইদুল আনাম টুটুল বেশকিছু টেলিভিশন নাটকও নির্মাণ করেছেন। তাঁর নির্মিত বিটিভিতে প্রচারিত নাটক নাল পিরান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। এখনও এই নাটকের আবেদন সর্বমহলে জ্বলজ্বল করছে। এছাড়া তিনি ৫২ গলির এক গলি, আপন পর, অপরাজিতা, নিশিকাব্য, দায় মার সন্তানেরা, বখাটে, হেলিকপ্টার, মৃতের প্রত্যাবর্তন, গোবরা চোর প্রভৃতি নাটক নির্মাণ করেছেন। তিনি একসময় নাটক ও চলচিচত্রের একজন সুঅভিনেতাও ছিলেন।
সাইদুল আনাম টুটুল সম্পর্কিত আরও খবর
⇒ টুটুলের স্বপ্নের নির্মাণ ‘কালবেলা’র মুক্তি
⇒ অশ্রুসিক্ত স্মরণে নির্মাতা সাইদুল আনাম টুটুল
সাইদুল আনাম টুটুল ডিরেক্টরস গিল্ডের প্রথম সাধারণ সম্পাদক ও আজীবন সদস্য। তিনি চলচ্চিত্র সম্পাদনায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।
১৯৫২ সালের ১ এপ্রিল পুরোনো ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন সাইদুল আনাম টুটুল। ১৯৬৭ সালে মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৭১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে থাকাবস্থায় তিনি চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। তিনি একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশ নেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব সাইদুল আনাম টুটুল আমৃত্যু সুস্থ চলচ্চিত্র সংস্কৃতি বিনির্মাণে কাজ করে গেছেন। চলচ্চিত্র পরিচালনা ও সম্পাদনার পাশাপাশি নাটক নির্মাণ ও সম্পাদনা করেছেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চলচ্চিত্র শিক্ষকতা করে গেছেন।
সাইদুল আনাম টুটুলের স্ত্রী মোবাশ্বেরা খানম। দুই কন্যা ঐশী আনাম ও অমৃতা আনাম। তার ভাই অভিনেতা তারিক আনাম খান।