নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করে পর্দা উঠলো দেশের সর্ববৃহৎ চলচ্চিত্র উৎসবের। স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনাকালীন কিছুটা জমকালোহীণভাবেই শুরু হলো ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। উৎসবে তেমন কোন বিদেশী অতিথির উপস্থিতি নেই। এবারের উৎসবের মূল স্লোগান ‘নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ’। বরাবরের মতো রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ এ উৎসবের আয়োজক।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় এ উৎসবের উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার মি. বিক্রম কে দোরাইস্বমী।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন উৎসব পেট্রন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ এবং মফিদুল হক। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
ঊনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, সামাজিক-অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ভেদাভেদ ভুলে সকল সভ্যতার মানুষকে একত্রিত করতে পারে চলচ্চিত্র, তাই চলচ্চিত্র উৎসব সমাজের ইতিবাচক ভূমিকা তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। করোনা ভাইরাসের সঙ্কটকালীন সময়ে সৃজনশীল মানুষদের এই উদ্যোগ প্রসংশনীয়।
মুজিব শতবর্ষের এই চলচ্চিত্র উৎসব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি উৎসর্গ করায় আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আরও খবর
⇒ চলচ্চিত্রে নারী ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের চলচ্চিত্রকার
⇒ বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে শুরু হচ্ছে ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসব
উৎসবের ছবির ভ্যানু নির্ধারণ করা হয়েছে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন ও কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা মিলনায়তন, শিল্পকলার নন্দন থিয়েটার (মুক্তমঞ্চ), বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স এবং সীমান্ত স্কয়ার সিনেপ্লেক্স। এ উৎসব চলবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।
উৎসবে উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হচ্ছে সুজান্না লিনডন নির্মিত ছবি ‘স্প্রিং ব্লোসম’। একজন টিনেজ তরুণীর সঙ্গে একজন প্রবীণের জাগতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি। ২০২০ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রতিযোগিতা করে।
বরাবরের মত এবারের উৎসবেও এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা বিভাগ, রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগ, বাংলাদেশ প্যানারোমা, সিনেমা অফ দ্য ওয়ার্ল্ড, চিল্ড্রেন ফিল্মস্, স্পিরিচুয়াল ফিল্মস, শর্ট অ্যান্ড ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্ম ও উইমেন্স ফিল্ম মেকার বিভাগে প্রদর্শিত হবে ৭৩টি দেশের মোট ২২৬টি চলচ্চিত্র।
এবারের উৎসবে এবারই প্রথম ‘লিজেন্ডারি লিডারস হু চেঞ্জ দি ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘ট্রিবিউট’ নামে আরও দু’টি নতুন বিভাগ সংযুক্ত করা হচ্ছে। এগুলোতে রয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য (৭০ মিনিটের বেশি) চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১০৭টি, স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন চলচ্চিত্রের সংখ্যা ১২০টি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আছে ৪১টি যার মধ্যে ৩৩টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও স্বাধীন এবং ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য।
চলচ্চিত্র দেখার নিয়মাবলী:
১. জাতীয় জাদুঘরের মূল মিলনায়তন: সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। এর বাইরে, সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটমূল্য ৫০ টাকা।
২. কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন: এখানে সকাল ১০টা থেকে শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শীত হবে। যেখানে অভিভাবকরাও শিশুদের সঙ্গে এই চলচ্চিত্রগুলো বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া, সকাল ১০টা, দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টার প্রদর্শনী শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। এর বাইরে, সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটমূল্য ৫০ টাকা।
৩. জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন: এই মিলনায়তনের সব প্রদর্শনী সবাই বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় আগে আসলে দেখবেন ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে।
৪. শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ও নৃত্যশালা: এখানের প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত। আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় আগে আসলে দেখবেন ভিত্তিতে আসন বণ্টন করা হবে।
৫. শিল্পকলার নন্দনমঞ্চ: এখানের প্রদর্শনীগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত।
এবারের উৎসবে মিলনায়তনের পাশাপাশি অনলাইনেও চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ রয়েছে। অনলাইন প্লাটফর্ম লাগভেলকিডটকম সিনেমা প্রদর্শন করছে।