‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো’ গানের সুরস্রষ্টা কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক আলী হোসেন মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন হাসপাতালে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ৮১ বছর বয়সে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ফুসফুস জটিলতায় ভুগছিলেন।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন আলী হোসেন। কিছুদিন আগে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছিলো। কিন্তু শেষে তিনি চলেই গেলেন। আলী হোসেনের একমাত্র ছেলে আসিফ হোসেন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। সেখানে তিনি ছেলের কাছে অবস্থান করছিলেন।
আলী হোসেন ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাবার চাকরির সুবাদে পাকিস্তানের করাচিতে পড়াশোনা করেন। ছোটবেলা থেকে গান শেখেন তিনি। সেখানে তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের শিক্ষক পিয়ারে খানের কাছে তালিম নেন। পাকিস্তানে নজরুল একাডেমিতে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন কিছুকাল।
তিনি ১৯৬৬ সালে ‘ডাক বাবু’ চলচ্চিত্রে প্রথম সুর ও সঙ্গীত পরিচালনা করেন। সেই ছবিতেই তিনি ‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো’ গানের সুর করেন ও সঙ্গীতায়োজন করেন। গানটিতে বাংলাদেশের আরেক গুনী শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ কণ্ঠ দেন। তার হাত ধরেই শাহনাজ রহমতুল্লাহ ও সৈয়দ আব্দুল হাদীর চলচ্চিত্রের গানে অভিষেক ঘটে। বাংলা ও উর্দু মিলিয়ে শতাধিক সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আলী হোসেন। বাংলা চলচ্চিত্রের অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরস্রস্টা তিনিই।
‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো’, ‘চাতুরী জানে না মোর বধূয়া‘, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান’,‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘আরে ও প্রাণের রাজা’, ‘কে তুমি এলে গো আমার এ জীবনে’, ‘এ আকাশকে সাক্ষী রেখে’, ‘কে তুমি এলে গো আমার এ জীবনে’ ‘ও দুটি নয়নে’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের সুর করেছেন আলী হোসেন। ‘ছোট সাহেব’, ‘দাগ’, ‘আনাড়ি’, ‘কুলি’সহ উর্দু ও বাংলা অসংখ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন আলী হোসেন।