কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক :
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত তারামন বিবিকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রসঙ্গে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আরিফ হোসাইন তালুকদার। গত সোমবার (৮ নভেম্বর) এই নোটিশ জারি করা হয়।
সর্ব সাধারণের অবগতির জন্য শাহরাজ হোসেন আমীরের পক্ষে তিনি এ নোটিশ দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে ২৫ জুলাই বীর প্রতীক তারামন বিবি তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশ ও প্রচারের লক্ষ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন করেন। এ চুক্তিটি করা হয় শাহরাজ হোসেন আমীরের সাথে। চুক্তি অনুযায়ী সিনেমাটির নাম ‘একাত্তরের তারামন’। যার স্বত্বাধিকারী শাহরাজ হোসেন আমীর।
নোটিশে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে তারামন বিবিকে নিয়ে অন্য কেউ চলচ্চিত্র নির্মাণ করলে, তা হবে আইন পরিপন্থী। তাই তারামন বিবিকে নিয়ে চলচ্চিত্র, নাটক, টেলিফিল্ম নির্মাণ করা থেকে সংশ্লিষ্টদের বিরত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘তারামন’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে আরশীনগর মিডিয়া। ষড়ৈশ্বর্য মুহম্মদের চিত্রনাট্যে এটি নির্মাণ করবেন আমিনুর ইসলাম লিটন। বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসিরউদ্দীন ইউসুফ সিনেমাটির উপদেষ্টা পরিচালক হিসেবে থাকবেন। এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করেই নোটিশটি জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে শাহরাজ হোসেন আমীর বলেন, তারামন বিবির ছেলে তাহের এবং মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার আবদুল হাইসহ অনেকের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। আমি এ ডিসেম্বরে সিনেমাটির কাজ শুরু করব। তারামন বিবি বেঁচে থাকা অবস্থায় আমি তাঁর স্পটগুলোতে একাধিকবার ভিজিট করেছি। খুব বাস্তবভিত্তিক করে সিনেমাটি বানানোর চেষ্টা করছি। নতুন সিনেমার যে ঘোষণা উনারা দিয়েছেন তারামন বিবি বা তাঁর পরিবারের কাছ থেকে তারা কোনো অনুমতিই নেন নি।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের আরও খবর
⇒ মুক্তিযুদ্ধের ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্রে ফেরদৌস
এদিকে সদ্য ঘোষিত ‘তারামন’ চলচ্চিত্রে নির্মাতা আমিনুর ইসলাম লিটন বলেন, আমি লোক মারফত নোটিশের ব্যাপারে জেনেছি, কিন্তু নোটিশ হাতে পাই নি। আমি যতটুকু জানি ‘একাত্তরের তারামন’ সিনেমা আর আমাদের ‘তারামন’ সিনেমার গল্পের প্লট আলাদা। ওই সিনেমাটি ছিল তারামান বিবির আত্মজীবনী। কিন্তু আমাদের সিনেমাতে মুক্তিযুদ্ধে নাম না জানা, অজানা বীর নারীদের অবদান তুলে ধরা হবে। এখানে শুধু তারামন বিবিই না, আরও অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধার গল্প থাকবে। গল্পের প্লট আলাদা হলে নির্মাণে কোনো জটিলতা থাকার কথা না।
লিটন আরও বলেন, ‘একাত্তরের তারামন’ সিনেমার জন্য চুক্তি করা হয়েছিল প্রায় দশ বছর আগে। তখন তারামন বিবি জীবিত ছিলেন। তার ইচ্ছা ছিলো সিনেমাটি দেখে যাওয়ার। কিন্তু এখন তিনি জীবিত নেই। সে ক্ষেত্রে আশা করি কোনো জটিলতা হবে না।
গল্পের প্লট ভিন্ন হলেও কী কোনো জটিলতা হবে কিনা জানতে চাইলে আইনজীবী আরিফ হোসাইন তালুকদার বলেন, চুক্তি অনুযায়ী কোনো জটিলতা নেই। কিন্তু শাহরাজ হোসেন আমীর চুক্তির সাথে এফিডেভিটও করেছেন। যেটার সাক্ষী ছিলেন তারামন বিবির ছেলে। উনি যদি আপত্তি দেন, তাহলে শাহরাজ হোসেন আমীর ছাড়া অন্য কেউ সিনেমা বানাতে পারবেন না।