কলকাতা থেকে মুম্বাই গিয়েছিলেন নায়ক হতে। সুবিধা করতে পারেননি সেখানে। চলে এলেন, কলকাতার মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু সিনেমার অভিনেতা হতে চান। একসময় ঢাকায় এসে পরেন পরিবারসহ। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন পা ফেলেন। নিজের অভিনয়গুন দিয়ে জয় করে নেন এ দেশের মানুষের হৃদয়। ষাটের দশকে ঢালিউডের সিনেমায় অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান। এরপর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। চিত্রনায়ক রাজ্জাক হয়ে উঠেন সিনেমার একচ্ছত্র নায়ক। উপাধি পান নায়ক রাজ হিসেবে। ছয় দশকের ক্যারিয়ার শেষ করে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট পাড়ি জমান পরপারে। আজ ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী নায়ক রাজ রাজ্জাকের।
নীল আকাশের নিচে ঘুরে বেড়ানো প্রেমিক পুরুষ, রংবাজের গুন্ডা প্রেমিক আর বাবা কেন চাকরের আদর্শ বাবা চরিত্রে অভিনয় করে কিংবদন্তি হয়ে উঠা রাজ্জাক ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘অমর প্রেম’, ‘ঢাকা ৮৬’, ‘সৎ ভাই’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘বেঈমান’, ‘আকাশ কতো দূরে’সহ বহু কালজয়ী ছবিতে অভিনয় করেছেন।
১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতার ৮ নম্বর নাগতলা রোডের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুর রাজ্জাক। ১৯৬৪ সালে কলকাতা ছেড়ে স্ত্রী-পুত্রসহ ঢাকায় এসে বসবাস শুরু করেন। তিনি ‘মুখ ও মুখোশ’ চলচ্চিত্রের পরিচালক আব্দুল জব্বার খানের সহযোগিতায় বাংলাদেশি ফিল্মে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন তিনি।
এর আগে জন্মস্থান কলকাতায় সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন তিনি।
১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। একই বছর জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে (লখিন্দর) অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা ওরা ১১জনসহ ছন্দ হারিয়ে গেল, অবুঝ মন সিনেমায় অভিনয় করে চলচ্চিত্রের একচ্ছত্র নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি প্রায় ৫০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন রাজ্জাক। রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশনের ব্যানার তিনি প্রযোজনা করেন বেশকিছু সিনেমা।
রাজ্জাক মোট পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন রাজ্জাক।