বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী লোকক্রীড়া নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে রাসেল রানা দোজা নির্মাণ করেছেন প্রামাণ্য চলচ্চিত্র “সোনার তরী”। চলচ্চিত্রটি এবার শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিতব্য সার্ক চলচ্চিত্র উৎসবে রাষ্ট্রীয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা নিজে। আগামী ২৪ – ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সার্ক চলচ্চিত্র উৎসব।
নির্মাতা জানিয়েছেন, প্রামাণ্য এই চলচ্চিত্রটি আবর্তিত হয়েছে বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী লোকক্রীড়াকে (নৌকা বাইচ) কেন্দ্র করে। বাইচের নৌকা বানানোর ধারাবাহিক কর্মযজ্ঞ অর্থায়ন, গাছ নির্বাচন / ক্রয়, কাঠমিস্ত্রিদের নিয়মিত কাজের মাধ্যমে বিভিন্ন অংশ (খোল, হাল, বৈঠা, গলুই)তৈরি, এবং এগুলোর সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নৌকা হয়ে ওঠার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
এ সিনেমায় উঠে এসেছে নৌকাটি নির্মাণের পাশাপাশি বাইচালদের সংগঠিত করে নিয়মিত বাইচে ব্যবহৃত সারিগানের মহড়া,এবং বয়াতি,দোহার, বাদ্যযন্ত্রীসহ স্ব-স্ব কাজের সকলের একাগ্রতার চিত্র। নৌকাটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর বাহারি রঙ ব্যবহার পূর্বক এর বিভিন্ন অংশে আল্পনা করে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা এরপর লোকবিশ্বাস, লোকাচার ও ধর্মীয় রীতি মেনে ডাঙ্গা থেকে প্রথম নৌকাটি জলে নামানো সহ চলে বেশ কিছুদিন নিয়মিত মহড়া।
বেশ কয়েক দিন ধরে সারি গানের তালে তালে বৈঠা প্রক্ষেপণের মাধ্যমে কৌশলগত জায়গাগুলো তারা ঠিক করে নিয়ে থাকে। এবং তারা অপেক্ষা করতে থাকে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের কাঙ্খিত সেই দিনের জন্য।
চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার দিন সকালবেলা সকলেই নতুন গেঞ্জি ও গামছা পরিধান করে একে একে সকলেই নৌকায় গিয়ে উঠে। সারি গানের তালে তালে বৈঠা প্রক্ষেপনের মাধ্যমে সোনার তরী কে তারা প্রতিযোগিতার স্থলে হাজির করে একটি বিশাল এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে। অর্থাৎ সোনার তরী সেখানে একটি এলাকার হয়ে করে প্রতিনিধিত্ব।
চলচ্চিত্রটি জামালপুর জেলার মেলান্দহ ও ইসলামপুর উপজেলায় এবং টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর উপজেলার বিভিন্ন লোকেশনে চিত্রায়িত হয়েছে। শিল্প সমালোচক এবং শিক্ষক মইনুদ্দীন খালেদের তত্ত্বাবধানে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্রটি।