কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
ঢাকায় শুরু হয়েছে ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এ উৎসবে ৭৫টি দেশের মোট ২২০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এসব চলচ্চিত্রের ভেতর বাংলাদেশের মোট ৪৪টি চলচ্চিত্র দেখানো হবে। শনিবার ১১ জানুয়ারি দেশের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসরের উদ্বোধন করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এ উৎসবে প্রদর্শিত হবে নির্মাতা ঝুমুর আসমা জুঁইয়ের লোকজ শিল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘রসের কুটুম’।
ঝুমুর আসমা জুঁই লোকজ শিল্প নিয়ে কাজ করেন। এর আগে তিনি নির্মাণ করেছেন বেশকিছু লোকজ ও গ্রামীণ জনপদ নিয়ে সিনেমা। এর মধ্যে রয়েছে ‘দ্যা লক্ষণ দাস সার্কাস’, ‘পালকি’, ‘ভাস্কর্য, মাটির ময়না’, ‘পুতুল পুরাণ’, ‘রথ যাত্রার বাকি ইতিহাস’ ইত্যাদি। ছবিগুলো ২১তম ও ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদনির্শত হয়েছিলো। এমনকি বিদেশের চলচ্চিত্র উৎসবেও ছবিগুলো প্রদর্শিত হয় ও প্রশংসা কুড়ায়।
এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ জুঁইয়ের নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘রসের কুটুম’-এর দুটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। সিনেমা বক্স প্রযোজিত ‘রসের কুটুম’-এর প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ছবিটি দেখানো হবে। ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটায় শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে চলচ্চিত্রটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী হবে ।
কি আছে ছবিটিতে

ঢাকা আন্তের্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে ‘রসের কুটুম’
প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় আজকের পৃথিবী ধীরে ধীরে মৃত্যপুরীতে রূপ নিচ্ছে। দালানকোঠা তৈরি করার জন্য গ্রামে-গঞ্জে অনেক গাছ কাটা হয়, যার মধ্যে খেঁজুর গাছ অন্যতম। শুক্কুর আলী একজন গুড় তৈরির শিল্পী, গ্রামের ভাষায় যাকে বলে গাছি। গুড় তৈরির জন্য মাসের পর মাস বাড়ি থেকে দূরে খোলা জায়গায় তাঁবু অথবা টিনের ঘর বানিয়ে থাকতে হয় এই গাছিদের। কুয়াশায় শীতের রাতে কাঁপতে কাঁপতে গাছে উঠে রস নামায় তারা, আলো ফোঁটার আগেই সনাতন পদ্ধতিতে খেঁজুর/পাটালি গুড় বানায় এই কারিগররা। যখন এই খেঁজুরের রস গাঢ় সোনালী রং নিয়ে গুড়ে রুপান্তরিত হয়, দেখতে বেশ নান্দনিক লাগে। খেঁজুরের রস যেমন সুস্বাদু, তেমনি মজার। গুড় বানানোর পদ্ধতিও একটু ভিন্নরকম। সবচেয়ে বড় কথা এটা বানাতে বা সংরক্ষণে কোনো রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয় না। এরকম্ একটা আলেখ্য দাঁড় করানো হয়েছে সিনেমায়।
এ বিষয়ে নির্মাতা ঝুমুর আসমা জুঁই জানান, খেজুরের গুড় তৈরির ইতিহাসকে ধরে রাখার তাগিদ অনুভব করলে গুড় তৈরির এই সনাতন পদ্ধতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতেই হবে। গুড় তৈরির প্রক্রিয়ায় যে পরিশ্রম হয় তার প্রতিদান কারিগররা কখনোই পান না বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘খেজুরের গুড়ের গুণগত মান আকর্ষণীয়। খেঁজুরের রস ও গুড় বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। এতে দেশ ও গুড়ের কারিগর উভয়েই উপকৃত হবে।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় চলচ্চিত্র উৎসব, যা থাকছে ফ্যাস্টিভ্যালে