কালচারাল ইয়ার্ড ডেস্ক:
বাংলার লোকসঙ্গীতের কিংবদন্তি সাধক শাহ আবদুল করিমকে স্মরণ করে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে বিশেষ আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। ছায়ানটের নিয়মিত আয়োজনে এবারের ‘শ্রোতার আসর’ উৎসর্গ করা হয় এই প্রয়াত বাউল সাধককে।
আয়োজনের শুরুতে বক্তব্য দেন ছায়ানট সভাপতি সারওয়ার আলী। তিনি বলেন,
“শাহ আবদুল করিম ব্যতিক্রমী বাউল সাধক। তিনি গান করেছেন বাঁচার জন্য, বঞ্চনার বিরুদ্ধে। তিনি সমাজ সচেতন বাউল সাধক। করিমের গান মানুষকে সম্প্রীতির বাঁধনে বাঁধে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাউল সাধকেরা বাংলার গ্রামীণ সমাজে সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যের যে বন্ধন তৈরি করেছিলেন, তা আজ বিলুপ্তপ্রায়। বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িকতার বেড়াজালে আবদ্ধ এ সময়ে শাহ আবদুল করিমের গান আরও প্রাসঙ্গিক।
২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন প্রায় দেড় হাজার গান রচয়িতা ও গায়ক শাহ আবদুল করিম। তার স্মৃতিকে শ্রদ্ধা জানাতেই ছায়ানট আয়োজন করে এই আসর।
গান পরিবেশনার শুরুতে শিল্পী ফারজানা আফরিন ইভা পরিবেশন করেন করিমের জনপ্রিয় দুটি গান— ‘প্রাণ নাথ ছাড়িয়া যাইও না বন্ধুরে’ এবং ‘তোমার পিরিতে বন্ধু গো’। এরপর একে একে গান শোনান শিল্পীরা—
সোহেল রানা (‘মন মিলে মানুষ মিলে সময় মিলে না’, ‘জীবন আমার ধন্য যে হয়’)
নাজমুল আহসান তুহিন (‘মানুষ হয়ে তালাশ করলে মানুষ পাওয়া যায়’, ‘দরদীয়া রে বন্ধু’)
বিমান চন্দ্র বিশ্বাস (‘কেন পিরিতি বাড়াইলি রে বন্ধু’, ‘ভব সাগরের নাইয়া’)
আবুল কালাম আজাদ (‘মন মজালে ওরে বাউলা গান’, ‘আগের বাহাদুরি এখন গেল কই’)
অনুষ্ঠানের শেষভাগে পরিবেশনা করেন খ্যাতিমান লোকসংগীতশিল্পী চন্দনা মজুমদার। তিনি গেয়ে শোনান ‘কূলমান সঁপিলাম তোমারে’, ‘তুমি বিনে আকুল পরান’ এবং ‘আমার প্রাণ কান্দে’।
এছাড়া করিমের শিষ্য, সুনামগঞ্জ থেকে আসা বাউল রণেশ ঠাকুর গেয়ে শোনান ‘মোদের দিন গেল গোলমালে’, ‘সাধ করে পরেছি গলে’ এবং ‘কূল হারা কলঙ্কিনী’। তার পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে নেপথ্য পাঠ ও সঞ্চালনা করেন জয়ন্ত রায়। যন্ত্রসংগীতে ছিলেন— দোতারায় রতন কুমার রায়, মন্দিরায় প্রদীপ কুমার রায়, ঢোলে দশরথ দাশ, তবলায় স্বরূপ হোসেন এবং বাঁশিতে মামুনুর রশীদ।